বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিতে হবে -রাবিতে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতের কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আমরা ওপার থেকে ছটফট করেছি। আজ তাই বিদেশি মানুষ হিসেবে নয়; আপনাদের আপনজন হিসেবে এদেশে এসেছি। মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের বেদনা-যন্ত্রণা উপলব্ধি করেছি। আপনাদের মাঝে এসে সেই যন্ত্রণার খানিকটা লাঘব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবিদদের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধাবোধ যতটুকু থাকে তার চেয়ে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বেশি থাকে। কারণ, তাদের কর্ম মানুষের সঙ্গে একটি গভীর মেলবন্ধন তৈরি করে দেয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সোবহান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ নূরুল্লাহ্, সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ওয়াজেদ আলী, হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর মুর্ত্তজা খালেদ প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় হলে তিন দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। প্রথম দিনে সোমবার প্রদর্শিত হয় এটিএন বাংলার প্রামাণ্যচিত্র 'মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস' ও চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত 'ওরা ১১ জন'। আজ মঙ্গলবার প্রদর্শিত হবে হুমায়ূন আহমেদের 'শ্যামল ছায়া' ও নাসিরউদ্দিন ইউসুফের 'একাত্তরের যীশু'। বুধবার প্রদর্শিত হবে হুমায়ূন আহমেদের 'আগুনের পরশমণি' ও তৌকীর আহমেদের 'জয়যাত্রা'। তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী বিনামূল্যে সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রদর্শনী শুরু প্রতিদিন দুপুর সোয়া ২টা এবং বিকেল ৫টায়।
হলের খবর
আবেদনের শেষ তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নতুন আবাসিকতার জন্য আগ্রহী ছাত্রদের কাছ থেকে নিধারিত ফরমে দরখাস্ত আহবান করা হয়েছে। আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ১১ সেপ্টেম্বর বেলা ১.০০ টা। গত ১২/১/০৯ ইং তারিখের বিজ্ঞপ্তির ফলে যে সব ছাত্র আবেদন করেছেন তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই । তবে যে সব ছাত্রদের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করার পর বর্ষ পরিবর্তন হয়েছে তাদের আবেদনপত্রের সাথে পে-ইন স্লিপ ও অন্যান্য কাগজ পত্র জমা দিতে হবে ।
উল্লেখ্য, এক শয্যা কক্ষের জন্য মাস্টার্স শেষ বর্ষের এবং চতুর্থ বর্ষের আবাসিক ছাত্ররা আবেদন করতে পারবে। দ্বি- শয্যা কক্ষের জন্য ৩য়,৪র্থ বর্ষের আবাসিক ছাত্র ও মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্ররা আবেদন করতে পারবে। আবেদন ফরমের সাথে ক)পাসর্পোট সাইজের ১কপি সত্যায়িত ছবি, খ)বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সকল পরীক্ষার নম্বরপত্রে ফটোকপি।, গ) বর্তমান পে-ইন স্লিপএর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
-গোলাম র্মতুজা
রাবির নতুন ক্যালেন্ডার পাওয়া যাচ্ছে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ সালের দেয়াল ক্যালেন্ডার পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন -১ এর জনসংযোগ দপ্তর থেকে ২০টাকার বিনিময়ে কেনা যাবে।
-গোলাম র্মতুজা
নবাব আব্দুল লতিফ হলে আবাসিকতার বিজ্ঞপ্তি
নবাব আব্দুল লতিফ হলে আবাসিকতা লাভের জন্য মাস্টার্স, ৪র্থ ও ৩য় বর্ষের ছাত্রদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীরা অফিস চলাকালীন ২০/- টাকার বিনিময়ে হল থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবে। আবেদনের শেষ তারিখ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
- মো: গোলাম মর্তুজা
মেধাবীদের স্বর্ণপদক দিলো তাপসী রাবেয়া হল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাপসী রাবেয়া হলের কৃতী ছাত্রীদের স্বর্ণপদক প্রদান এবং বার্ষিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও অন্তঃকক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ২০০৬ ও ২০০৭ সালের অনার্স পরীক্ষায় ১ম শ্রেণী অর্জনকারী ২২ জন ছাত্রীকে স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়। অন্তঃকক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ৯টি ইভেন্টে এবং বার্ষিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ১৬টি ইভেন্টের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। হল প্রাধ্যক্ষ ড. মুর্শিদা ফেরদৌস বিন্তে হাবিবের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ নূরুল্লাহ্ ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এম আব্দুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো. আলতাব হোসেন স্বাগত বক্তব্য ও স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কৃতী ছাত্রী নাজনীন পারভীন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য কৃতি ছাত্রীদের স্বর্ণপদক এবং বার্ষিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও অন্তঃকক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান করেন,উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ সনদপত্র দেন। অন্তঃকক্ষ ক্রীড়ায় নাজিয়া শারমীন জেনী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায়, পারমিতা হক কঙ্কন ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন হয়।
-শেখ আল- এহসান
শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হল
এক কার্ডেই পাঁচ বছর
চার বছরের অনার্স, এক বছরের মাস্টার্স। মোট এই পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন শেষ। নিয়মানুযায়ী প্রতি বছরই পরিচয়পত্র নবায়ন করতে হয় শিক্ষার্থীদের। প্রত্যেক বর্ষে নতুন নতুন পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট হল থেকে। এজন্য প্রত্যেক বর্ষে ভর্তির সময় নেয়া হয় পরিচয়পত্র ফি-ও। কিন্তু হয়তো একমাত্র ব্যতিক্রম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হল। এই হলে অনাবাসিক বা আবাসিক ছাত্রদের পাঁচ বছরে একবার পরিচয়পত্র করলেই চলে। এক পরিচয়পত্রেই পাঁচ বছর পার।
শুধুমাত্র পরিচয়পত্রের ক্ষেত্রেই এই ঢিমেতালা ভাব নয়, হলে আরো সব কাজেও একই অবস্থা। আবাসিকতা দেয়ার জন্য গত ২২ জুলাই সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে হলে। কিন্তু এখনো পযর্ন্ত ফলাফল ঘোষণা করে নি হল কর্তৃপক্ষ। এব্যাপারে হলের সেকশন অফিসার মোবারক আলী খান জানান, শিগগিরই ফলাফল দেয়া হবে। প্রক্রিয়া চলছে। এই হলে এই অবস্থা হলেও এই সময়ের মধ্যে শামসুজ্জোহা হলে দুইবার আবাসিকতা প্রদান করেছে ওই হল কর্তৃপক্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এই সময়ের মধ্যে একবার আবাসিকতা দিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো আবাসিকতা আবেদন আহ্বান করেছে।
হলের অনাবাসিক ছাত্র বাঁধন, রুবেল, অসীম সাহাসহ কয়েকজন জানান, পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গেলেও এক দিনে কাজ হয় না হলে। পরীক্ষার ফরমে প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর নেয়ার জন্য ফরম জমা দিলে অনেক সময় হলের কর্মকর্তারা তা হারিয়ে ফেলে। ফরম জমা দেয়ার সময় কোন প্রমাণপত্র দেয়ার পদ্ধতি না থাকায় এর দায়িত্বও তার নিতে চায় না। এছাড়া ভর্তির সময় বিভিন্ন ধরণের চাঁদা নেয়া হলেও সেগুলোর কোন রশিদ দেয়া হয় না বলে ছাত্ররা জানান।
-গোলাম মর্তুজা
মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার
প্রতিবাদে রাবির ৩০১ শিক্ষকের বিবৃতি
সাবেক জালানী উপদেষ্টা ও আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০১ জন শিক্ষক। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমকে যারা সহ্য করতে পারেনা তারাই এমন ঘৃণ্য হামলা পরিচালনা করেছে। জাতীয় স্বার্থের পক্ষে যারা সোচ্চার কন্ঠ তারা একটি বিশেষ মহলের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। নির্ভিক কলম সৈনিক মাহমুদুর রহমান জাতীয় স্বার্থ বিরোধী এবং আধিপত্যবাদী শক্তি ও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের বিরুদ্ধে কলম ধরার কারণেই মূলত তার উপর এধরনের হামলা চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, আইআইইউসি’র সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এ কে এম আজহারুল ইসলাম, রাবির সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. ফাইসুল ইসলাম ফারুকী, প্রফেসর ড. এম আলতাফ হোসেন, প্রফেসর ড. এম মামনুনুল কেরামত, ইবির সাবেক ভিসি প্রফেসর এম রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড. এম উমার আলী, রাবি’র সাবেক প্রোভিসি প্রফেসর ড. কে এ এম শাহাদত হোসেন মন্ডল, আইইআর’র সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. এম নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. আব্দুল হামিদ, বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. এম আবুল হাশেম, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর এম নজরুল ইসলাম, প্রফেসর শাহ্ মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান, প্রফেসর ড. এম আজহার আলী, প্রফেসর ড. এম শামসুল আলম সরকার, প্রফেসর ড. সিএম মোস্তফা, প্রফেসর ড. এফ নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. বেলাল হোসেন, প্রফেসর ড. এম নিজাম উদ্দীন, ড. এম হাসানাত আলী প্রমুখ।
রাবি শিক্ষক সমিতির মেয়াদোত্তীর্ণ
সভাপতি পদের অপব্যবহার করছেন
-২০৭ শিক্ষকের বিবৃতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির মেয়াদউত্তীর্ণ কার্যকরি কমিটির সভাপতি পদের অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০৭ শিক্ষক। তাকে বিভিন্ন পদে না রাখার দাবিও জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ২০৭ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে রোববার এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৬ সালের ৯ মার্চ রাবির শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর কার্যকরি কমিটির মেয়াদও শেষ হয়। কিন' কার্যকরি সংসদের সভাপতি জিল্লুর রহমান অদ্যবধি পদ আকড়ে ধরে আছেন। কার্যকালে সমিতি শিক্ষকদের স্বার্থে উল্লেখযোগ্য কোন অবদান রাখতে পারেনি। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতিন নীতিমালা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও রাবির শিক্ষক সমিতি নীরব ভূমিকা পালন করে। ২০০৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঢাবির শিক্ষক সমিতি প্রতিবাদ ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও এখানকার শিক্ষক সমিতি মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা বলেই কোন ভূমিকা পালন করেনি। এমনকি ওই বছরে রাবির ৮ শিক্ষক গ্রেপ্তার হওয়ার পরও শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের মুক্তির ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। শিক্ষকদের মৃতুতেও সমিতি কোন শোক সভা করেনা। শিক্ষক সমিতির অসি-ত্ব পরিলক্ষিত হয় কেবল সিডর, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান-দের সাহায্যার্থে।
সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান এখনও শিক্ষক সমিতির মেয়াদউত্তীর্ণ কার্যকরি সংসদের সভাপতির পদ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যঅলয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভায় এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বিধিবর্হিভূত বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষকারি শিক্ষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- অধ্যাপক মোজাফ্ফর হোসেন, আনন্দ কুমার সাহা, মোখলেসুর রহামন, চিত্ত রঞ্জন মিশ্র, খায়রুল আলম খান, চৌধুরী মো. জাকারিয়া, মাহবুবর রহমান, ফায়েক উজ্জামান, শামসুদ্দিন ইলিয়াস, গোলাম সাব্বির সাত্তার, মলয় ভৌমিক, সাইফুল ইসলাম, শাহ্ নওয়াজ আলী, জালাল উদ্দীন, সফিকুন নবী সামাদী, মুসতাক আহমেদ প্রমূখ।
বঙ্গবন্ধু হল প্রাধ্যক্ষের শিবির তোষণ : অপসারণ চায় ছাত্রলীগ
নিজেকে 'স্বচ্ছ' হিসেবে প্রমাণের ধান্দায় যোগ্যতা থাকার পরও ছাত্রলীগের কোন কর্মীকে হলে সিট দেন নি তিনি। অথচ, চিহ্নিত ৫৬ ছাত্রশিবির কর্মী ঠিকই সিট পেয়ে গেছে তার সিগনেচারে। ছাত্রদরে দেয়া টাকা দিয়ে তিনি প্রকাশ করেছেন বঙ্গবন্ধুর স্মারকগ্রন্থ। বিনামূল্যে তা ছাত্রদের দেয়ার কথা থাকলেও তিনি টাকা দিয়ে তা বিক্রি করে ফুলিয়ে তুলছেন নিজের মানিব্যাগ। এমন বিস্তর অভিযোগ বর্তশান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. এসএ হায়দারের বিরুদ্ধে। শেষমেষ তাকে সোমবার অপসারণের দাবি পর্যন্ত তুলেছে খোদ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ।
হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী তাজমহল ও কাওসার জানান, গত মাসে এই হলে আবাসিকতার আবেদন করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী ছাত্রলীগের বহু নেতা-কর্মী আবেদন করেন। তাদের প্রত্যেকেই চতুর্থ বা তৃতীয় বর্ষের ছাত্র হওয়া স্বত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এসএ হায়দার তাদের আবাসিকতা দেননি। উল্টো ৫৬ শিবির ক্যাডারকে বেছে বেছে আবাসিকতা দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি আবারো হলে আবাসিকতার নোটিশ দিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ। এবারো তারা আবাসিকতা থেকে বঞ্চিত হবেন এই আশঙ্কা নিয়ে কথা বলতে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তাজমহল ও কাওসারের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এসময় প্রাধ্যক্ষ হলে না থাকায় তারা কয়েক দফা তাকে ফোন করলেও তিনি হলে আসেন নি। পরে তারা আবাসিক শিক্ষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বঞ্চনা কথা জানান। কিন' তিনিও প্রাধ্যক্ষের মতো বিষয়টি আমলে না নেয়ায় ছাত্রলীগের কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এসময় তারা হলের ভেতর বিক্ষোভ করে প্রাধ্যক্ষ এসএ হায়দারের অপসারণ দাবি করেন।
অপসারণ দাবি করার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলে ধরেন। ছাত্রলীগ কর্মী তাজমহল জানান, গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়ক স্মারকগ্রন' ‘মৃত্যুহীন প্রাণ’ প্রকাশিত হয়। হল ফান্ডে ছাত্রদের দেয়া টাকায় এই গ্রন' প্রকাশ করা হলেও প্রাধ্যক্ষ তা বিক্রি করছেন ছাত্রদের কাছেই। সে টাকাও যাচ্ছে তার নিজ পকেটে। ছাত্রলীগ কর্মী কাওসার অভিযোগ করেন, হলে বহিরাগত শিবির ক্যাডাররা ঢুকলে তাদের পরিচয়পত্র না দেখেই হলের ভেতর ঢুকতে দেন ড. হায়দার। অথচ, ছাত্রলীগের কোন কর্মী ঢুকতে চাইলে তাকে পরিচয়পত্র দেখানোসহ নানান জেরার মুখে পড়তে হয়। তিনি আরো অভিযোগ করেন, ড. হায়দার প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পরপরই কোন কারণ ছাড়াই হলের লাইব্রেরির সমসত্ম বই সরিয়ে নেয়া হয়েছে। লাইব্রেরিতে বইয়ের আলমারিগুলো খালি পড়ে আছে। আগে একদিন পর পর হলের টয়লেট পরিষ্কার করা হলেও এই প্রাধ্যক্ষ দায়িত্ব নেয়ার পর সপ্তাহে একদিন তা করা হয়। এসব অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগের জন্য চেষ্টা করা হলে প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এসএ হায়দার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে লাইন কেটে দেন।
রাবিতে শিক্ষককে পেটাল ছাত্রলীগ নেতা, আজ থেকে ধর্মঘট
ভর্তি বাণিজ্যে বাধা দেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছেন ছাত্রলীগ নেতা। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের প্রভাষক ড. অনুপম হীরা মন্ডলকে পিটিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ইমদাদুল হক। ঘটনার প্রতিবাদে ও ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবিতে ওই বিভাগের শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার থেকে সব বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বিভাগের শিক্ষার্থীরা ইমদাদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবিতে আজ থেকে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছেন।
ড. অনুপম হীরা মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, হিমানেশ বিশ্বাস নামে তার এক আত্মীয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তির সুযোগ পেয়ে গতকাল বুধবার ভর্তি হতে ক্যাম্পাসে আসে। এ সময় ওই বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল হক তাকে ভর্তিতে সহায়তা করার কথা বলে কাজলা গেট এলাকায় নিয়ে যান। এ সময় ইমদাদ তার দুই সহযোগীর সহায়তায় হিমানেশের কাছ থেকে ভর্তি সংক্রান্ত জরুরি কাগজ কেড়ে নিয়ে তার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। হিমানেশ মোবাইলে বিষয়টি ড.হীরাকে জানালে তিনি সেখানে গিয়ে ইমদাদের কাছে হিমানেশের কাগজপত্র ফেরত চাইলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় শিক্ষক পরিচয় দেওয়ার পরও ইমদাদ ড.হীরাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তার দুই সহযোগী পালিয়ে গেলেও পরে অন্য ছাত্ররা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ড. হীরা মতিহার থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ঘটনার পরই ফোকলোর বিভাগে জরুরি একাডেমিক সভা ডাকা হয়। বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর শহীদুর রহমান জানান,একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদের ছাত্রত্ব বাতিল না করা পর্যন্ত আজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিচারের দাবিতে তারা গতকালই উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সব বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার জন্য শিক্ষক সমিতিকেও পৃথক চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও সভাপতি জানান। এদিকে ঘটনার পর ফোকলোর বিভাগের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদের ছাত্রত্ব বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা আজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘট পালন করবেন।
ধর্মঘট চলাকালে কোনো বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা হবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাস বন্ধ থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের সমাবেশ চলাকালে সহকারী প্রক্টর তারেক নূর ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আজগর খোকনকে আন্দোলন করার জন্য শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।
ফোকলোর বিভাগ অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘট ডাক দেওয়ার পরপরই বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রক্টর প্রফেসর ড. জাকারিয়া জানান, তারা প্রশাসনিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
প্রকৌশল অনুষদের সনদ চান
৫ বিভাগের শিক্ষার্থীরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য চালু হওয়া প্রকৌশল অনুষদের অধীনে সনদ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই অনুষদের অধীনে থাকা বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে গতকাল শনিবার তারা মানববন্ধন, মৌন র্যালি ও উপাচার্যকে স্মারকপত্র দিয়েছেন।
অনুষদভূক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি ফলিত পদার্থ ও ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ নিয়ে প্রকৌশল অনুষদ চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই ৫ বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনুষদটির অন্তর্ভূক্ত হবে বলে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে। এর আগের শিক্ষার্থীরা পূর্বের বিজ্ঞান অনুষদের সনদই পাবেন। কিন্তু ওই বিভাগগুলোর ২০০৬-২০০৭, ২০০৭-২০০৮ ও ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, অনুষদটি চালুর জন্য তারা আন্দোলন করলেও কর্তৃপক্ষের নিয়মের গ্যাঁড়াকলে পড়ে তারা সনদ পাচ্ছেন না নতুন এই অনুষদটির অধীনে। তাই তাদেরও প্রকৌশল অনুষদের অধীনে সনদ দেয়ার দাবিতে তারা গতকাল কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে মানববন্ধন ও র্যালি শেষে উপাচার্য প্রফেসর আবদুস সোবহানকে স্মারকপত্র দেন।
নাট্যকলা বিভাগের অনিয়ম
বন্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের
স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, সেশন জট ও শিক্ষকদের পারষ্পারিক দ্বন্দ্বের কারণে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা। সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা তাদের এই দাবি জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিভাগে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে। বিশেষ করে ক্লাশে উপসি'তির হার কম হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের বাইরে বিভাগে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। ব্যক্তিগত আক্রোশের জের ধরে অনেক শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেয়া হয়। এসব নানান অনিয়ম তারা এতদিন সহ্য করে এলেও গত ২ নভেম্বর এসব অনিয়ম বন্ধের দাবিতে বিভাগে তালাও ঝুলিয়ে দেন। সেসময় সহকারী প্রক্টর তারেক নূর ও মুসতাক আহমেদ বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস'া নেবে বলে আশ্বাস দিলে তারা তালা খুলেও দেন। কিন' এরপরও শিক্ষকদের অন্যায় বন্ধ হয়নি। সমপ্রতি সব কোর্সের উপসি'তির খাতা হিসেব না করে তৃতীয় বর্ষের চার ছাত্রকে চূড়ানত্ম পরীক্ষার অযোগ্য (ডিসকলেজিয়েট) ঘোষণা করা হয়। ১৮ মাস পর গত ৭ নভেম্বর থেকে ওই বর্ষের পরীক্ষা শুরুর কথা ছিলো। কিন' অযোগ্য ঘোষিত ছাত্ররা পুনরায় উপসি'তির হার হিসেবের দাবি তুললে পরীক্ষাটি সমপ্রতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে বিভাগের এসব অনিয়ম বন্ধের দাবি জানান।
এব্যাপারে বিভাগের সদ্য যোগদানকারী সভাপতি অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক আরইউনিউজকে জানান, তিনি রোববার সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। এর আগের কোন অনিয়মের কথা তার জানা নেই। শিক্ষার্থীর তাকে কোন কিছু জানায়ও নি। যদি তাদের দাবির যথার্থতা থাকে তাহলে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি-অনিয়মের নানান অভিযোগ উঠলে চলতি বছরে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগে পরপর দুটি তদনত্ম কমিটি গঠন করা হয়। যার একটির তদনত্ম প্রতিবেদন গত ২৯ অক্টোবরের সিন্ডিকেট বৈঠকে জমা দেয়া হয়। ওই প্রতিবেদন জমা দেয়ার আগেই পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় বিভাগীয় সভাপতি কৃষ্ণপদ মন্ডলকে। তার জায়গায় কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ শাফিকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর গত রোববার সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক সভাপতি নাট্যব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিককে।
শিক্ষাজীবন বাঁচানোর দাবিতে
৪১ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
পরপর দুবার পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন তারা। তাই নিয়মানুযায়ী তারা ছাত্রত্ব হারাতে বসেছেন। শিক্ষাজীবন বাঁচানোর আবেদন নিয়ে এজন্য আজ সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ৪১ শিক্ষার্থী।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন ওই শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্যে রসায়ন বিভাগের ২৩ জন, ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি, ফলিত পদার্থ ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা, ভূগোল ও পরিবেশ, ফলিত গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২ জন করে এবং পদার্থ, ইতিহাস, আইন ও বিচার ও দর্শন বিভাগের ১ জন করে শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারা জানান, তারা সবাই বিভিন্ন বিভাগের ২০০৬-২০০৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। একই শিক্ষাবর্ষে পরপর দুইবার অকৃতকার্য হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী তাদের ছাত্রত্ব বাতিল হবার উপক্রম হয়েছে। তারা বিভাগের মাধ্যমে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল না করার আবেদন জানালে সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিয়মানুযায়ী তা প্রশাসনের কাছে পাঠায়। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে মানবিক দিক বিবেচনার আবেদন করলে সমপ্রতি তিনি তা করা সম্ভব নয় বলে বিভাগগুলোতে চিঠি দিয়েছেন। তাই মানবিক দিক বিচেনা করে তাদের শিক্ষাজীবন বাঁচানোর দাবিতে তারা আমরণ অনশন শুরু করেছেন গতকাল। শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্চ ৬ বছরের মধ্যে সম্মান কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। তাদের হাতে এখনো সেসময় রয়েছে। এই বিবেচনা করে হলেও তারা ছাত্রত্ব বাতিল না করার অনুরোধ করেছেন। সোমবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন তৈরির সময় পর্যনত্ম তারা অনশনরত ছিলেন এবং ওই সময়ের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ তাদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করেন নি বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রক্টর প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, তিনি ঘটনা শুনে ওই সময় (সাড়ে ৭টা) অনশনরতদের উদ্দ্যেশে রওনা দিচ্ছেন। সেখানে তিনি তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
উত্যক্তের প্রতিবাদ করায়
রাবি ছাত্রীকে চড়-কিল
ঘটনা ঘটালো ছাত্রলীগ ক্যাডার বিল
ছাত্রলীগ ক্যাডার বিল্লাল হোসেন বিলের অত্যাচারে বিভাগে যাওয়া যেনো নড়বড়ে সেতু পারপারের মতো হয়ে গিয়েছিলো তার জন্য। রাস্তার পাশে দাড়িয়ে কোন বখাটে যদি যেতে-আসতে অশ্লীল সব কথা আর ইঙ্গিত ছুড়ে দিয়ে উত্যক্ত করে তাহলে দশা এমনই হয়। তবুও এতদিন সহ্য করে এসেছেন তিনি। রোববার আর বাত্ধ মানেনি সহ্যের সীমানা। বিলের উত্যক্তের প্রতিবাদ করেছেন তিনি। বিনিময়ে ছাত্রলীগ ক্যাডার বিলে চড় আর কিলের শিকার হতো হলো তাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চারুকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন ওই ছাত্রী। রাস্তা দিয়ে বিভাগে যেতে প্রতিদিন বিলের বিরক্ত সহ্য করতে গয় তাকে। রোববার সকালেও রবীন্দ্র ভবনের পাশ দিয়ে বিভাগে যাচ্ছিলেন তিনি। রুটিন মাফিক আবার সেই বিল, সেই কটুক্তি। অন্যদিন চুপচাপ সয়ে গেলেও রোববার বিলের দিকে আঙুল উচিয়ে প্রতিবাদ করলেন তিনি। ক্ষমতার দাম্ভিকতায় বিল মেনে নিতে পারেনি সে প্রতিবাদ। তেড়ে এসে চড় আর কিল বসিয়ে দিলো ওই ছাত্রীর গালে। সেই সঙ্গে শাসিয়ে গেলো ঘটনা নিয়ে 'বাড়াবাড়ি' করলে ক্যাম্পাসে আসা হবে না ছাত্রীটির। আশপাশের শিক্ষার্থীরা দ্রুত বিলের হাত থেকে উদ্ধার না করলে এরচেয়েও খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারতো তার।
রোববার দুপুরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। রোববার এব্যাপারে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি প্রশাসন। যোগাযোগ করা হলে প্রক্টর আরইউনিউজকে জানিয়েছেন, সোমবার বিলকে ডেকে সতর্ক করে দেয়া হবে, যাতে সে শুধরে যায়। এরপর এমন ঘটনা ঘটালে বিলের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রক্টর জানিয়েছেন।
ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া। তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনা ক্যাম্পাসে অহরহ ঘটছে। কটুক্তি ছাড়াও ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়ে টানাহেচড়াও করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।' তিনি রোববারের ঘটনায় জড়িত বিলের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অবশেষে সামাজিক
বিজ্ঞানে ফোকলোর
শেষমেষ দীর্ঘ আন্দোলনের পর দাবি পূরণ হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি অনুযায়ী ফোকলোর বিভাগকে কলা অনুষদ থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে অন্তর্ভূক্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।
১৯৯৮ সালে কলা অনুষদের অধীনে বিভাগটি প্রতিষ্ঠার পর ২০০২ সাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিভাগটিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে নেয়ার দাবি জানাতে শুরু করেন। শিক্ষকদের আশ্বাসে মাঝে আন্দোলন স্থগিত থাকলেও গত বছরের ১৭ এপ্রিল গণস্বাক্ষর অভিযানের মধ্য দিয়ে আবারো আন্দোলন শুরু করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা অবস্থান ধর্মঘট ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে গত বছরের ১০ নভেম্বর থেকে প্রায় ৮ মাস ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করেন। অবশেষে গতকাল সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ফোকলোর বিভাগ আর কলা অনুষদে নয়; সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে থাকবে। এনিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে বিভাগের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯-এ।
বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর শহীদুর রহমান চৌধুরী প্রশাসেনর এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা এই প্রাপ্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির জন্য ভালো কিছু করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
'সাহিত্যের দায়, কাগজের দায়-একুশ শতক' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন্স কনফারেন্স হলে গত শনিবার বিকেল ৪ টায় ছোট কাগজ 'চিহ্ন'র আয়োজনে অনু্ষ্ঠিত হয়ে গেলো 'সাহিত্যের দায়, কাগজের দায়-একুশ শতক' শীর্ষক সেমিনার ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন,এ সময়ের সাহিত্যে ভাটা পড়েছে।গবেষণা,প্রবন্ধ ও সমালোচনার দিকেই বেশি ঝুকছে সবাই। প্রতি বছর গল্প,কবিতা ও উপন্যাসের যে বইগুলো বেরুচ্ছে তা খুবই সস্তা মানের। লেখকরা বাঙ্গালীর হাজার বছরের পথ পরিক্রমায় অর্জিত কৃষ্টি কালচারকে তাদের লেখার ভেতরে লালন করছে না। বাংলার খেটে খাওয়া মানুদের নিয়ে ভালো মানের গল্প,উপন্যাস লেখা হচ্ছে না। সাম্রাজ্যবাদের বিজয় যেন সাহিত্যকেও গ্রাস করেছে।
সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাবির ইংরেজি বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র মোজাফফর হোসেন। আলোচক ছিলেন প্রখ্যাত গল্পকার হরিপদ দত্ত,কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার, সাহিত্য বিষয়ক ছোট কাগজ 'চিহ্ন'-র সম্পাদক শহীদ ইকবাল, চিহ্ন বক্তা- কবি শামীম নওরোজ, কবি তুহিন ওয়াদুদ ও গল্পকার ও প্রবন্ধকার সৈকত আরেফিন।
কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার বলেন, বর্তমানে ছোট কাগজ ও বড় কাগজ বলে পার্থক্য থাকা উচিত নয়।কাগজের কর্পোরেট সাহিত্য মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।সাহিত্যে সমাজের সর্বস-রের জনগনের সম্মিলিত প্রয়াসকে স্থান দিতে হবে। আলোচনার মাঝে মাঝে চলে কবিতা আবৃত্তি। আলোচকদের বক্তব্য শেষে চলে দর্শকদের প্রশ্নত্তোর পর্ব। এরপর ক্লোজআপ ওয়ান তারকা হিমেলের একক সঙ্গীতানুষ্ঠনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
ছাত্রলীগ-ছাত্রমৈত্রী সংঘর্ষ, আহত ২
দলীয় টেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুরে এই ঘটনায় ছাত্রমৈত্রীর আহ্বায়কসহ ২ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়ছেন, রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ছাত্রমৈত্রীর দলীয় টেন্টে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন ছাত্রলীগ কর্মী হাবিব, তুহিন, রউফসহ ৭/৮জন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রমৈত্রীর আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম রিপন ও লাল্টু নেতাকর্মীসহ সেখানে এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের টেন্ট ছেড়ে যেতে বলে। ছাত্রলীগ কর্মীরা রাজি না হলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা গাছের ডাল ও চেয়ার নিয়ে হামলা চালায় ছাত্রমৈত্রীর নেতা-কর্মীদের ওপর। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘটনাস্থলে রিপন ও লাল্টু আহত হন। এসময় উভয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস'লে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
রোববারের ঘটনা নিয়ে ছাত্রমৈত্রীর আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম রিপন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কোন উষ্কানি ছাড়াই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা না করলে আমরা আন্দোলনে যাবো।’ তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন জানিয়েছেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান।
সমাজবিজ্ঞানের ভর্তি পরীক্ষায়
ভুল প্রশ্নপত্রে বিপাকে ভর্তিচ্ছুরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র নিয়ে বিপাকে পড়েছিলো ভর্তিচ্ছুরা। শুক্রবার পরীক্ষা চলাকালে একেক ভর্তিচ্ছুর কাছে একেক সংখ্যক প্রশ্ন সম্বলিত প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। শুরুতে এই নিয়ে ভর্তিচ্ছুরা বেকায়দায় পড়লেও পরে অবশ্য তা সংশোধন করে দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ভর্তিচ্ছুরা জানান, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। নিয়মানুযায়ী পরীক্ষার কক্ষগুলোতে পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেটের প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। কিন্তু প্রশ্নপত্রগুলো তৈরির সময় ভুল হওয়ায় শহীদুল্লাহ কলা ভবন ও মমতাজ উদ্দিন কলাভবনে পরীক্ষার কক্ষগুলোতে দেখা যায় কোন প্রশ্নপত্রে ১শটি, কোনটিতে ৪৫টি আবার কোনটিতে ৬০টি প্রশ্ন রয়েছে। এতে বিপাকে পড়ে যান ভর্তিচ্ছুরা। কক্ষে কর্তব্যরত শিক্ষকরা বিষয়টি বিভাগীয় সভাপতিকে জানালে দ্রুত সেগুলো সরিয়ে নিয়ে মূল প্রশ্ন থেকে ফটোকপি করে তা ভর্তিচ্ছুদের দেয়া হয়। এসময় ওই দুই ভবনের বিভিন্ন কক্ষে প্রায় ২০ মিনিট পরীক্ষা বন্ধ ছিলো। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অবশ্য পরে এই সময় পুষিয়ে দেয়া হয়।
সমাজবিজ্ঞানের ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র নিয়ে ভর্তিচ্ছুরা বিপাকে
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. একেএম শফিউল ইসলাম আরইউনিউজকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘শুধুমাত্র ওই দুই ভবনে সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রেই এমন ভুল ছিলো। ভর্তিচ্ছুদের সরবাহ করার জন্য প্রশ্নপত্র কপি করতে গিয়ে ভুলবশত এমন সমস্যার তৈরি হয়েছে। তবে ভুল ধরা পড়ার পর দ্রুত আমরা সঠিক প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে পরীক্ষা নির্বিঘে শেষ করেছি।’
টিকিট আছে বাস নেই
দুই ঘন্টা আটকে থাকলো হানিফ
তারা প্রত্যেকেই কেটেছিলেন রাজশাহী থেকে ঢাকা যাবার টিকিট। সোমবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে তাদের বাস আসার কথা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে। তারা তাই দাঁড়িয়েছিলেন সেই গেটের পাশে হানিফ এন্টারপ্রাইজ-এর টিকিট কাউন্টারে। রাত সাড়ে ১২টা পর্যনত্ম চললো তাদের অপেক্ষা। এরইমধ্যে ঢাকার দিকে চলে গেছে হানিফ এন্টারপ্রাইজের রাত ১২টা ও সোয়া ১২টার বাস। এবার বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন ভর্তি পরীক্ষার্থী দিতে আসা এই শিক্ষার্থীরা। তারা অবরোধ করতে শুরু করলেন রাজশাহী-ঢাকা সড়কে চলাচলকারী হানিফ এন্টারপ্রাইজের সব বাস । সোমবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এই অবরোধ চলেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বারবার তাগাদা দিলেও ওই কাউন্টার মাস্টার কনক তাদের বাস সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে পারেননি। রোববার রাতে জার্নি করে ঢাকায় এসে সোমবার সারাদিন বিজনেস অনুষদের পরীক্ষা দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা। ক্লান্ত-শ্রান্ত শিক্ষার্থীরা তাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাস্তায় নেমে ওই সড়কে চলাচলকারী হানিফ এন্টারপ্রাইজের সব বাস অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। প্রায় দুই ঘন্টা এই অবস্থা চলার পরও বাস কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এই বিক্ষোভ ধীরে ধীরে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আটকে রাখা বাসে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে পুলিশ এসে বাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রাত আড়াইটার দিকে ওই শিক্ষার্থীদের জন্য হানিফ এন্টারপ্রাইজের অন্য একটি বাসের ব্যবস্থা করে দিলে পরিসি'তি শানত্ম হয়।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হানিফ এন্টারপ্রাইজের বিনোদপুর কাউন্টার মাস্টার কনক আরইউনিউজেরএই প্রতিবেদককে জানান, সোমবার বাণিজ্য অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় যাত্রীদের চাপ বেশি ছিলো। একারণে সময়মতো বাসটি দেয়া যায়নি।
প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার
ফরম জমা শুরু মঙ্গলবার
মঙ্গলবার থেকে জমা দেয়া যাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফরম। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ফরম ছাড়া হয়েছে। সেখান থেকে লিগ্যাল সাইজে এই ফরম ডাউনলোড করে নিতে হবে ভর্তিচ্ছুদের। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফরম সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া যাবে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদনের যোগ্যতায় এবার আগের মতোই থাকছে। তবে কয়েকটি বিভাগে আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ভর্তি পরীক্ষার ফরম ডাউনলোড করে পরীক্ষার ফি হিসেবে এবারো শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে ফরমের সঙ্গে ১শ টাকা হারে জমা দিতে হবে। এ বছর বিজ্ঞান শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে চতুর্থ বিষয়সহ ৭.৫ জিপিএ পেলে বিজ্ঞান, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান এবং কৃষি অনুষদভূক্ত বিভাগগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। কিন্তু এই শাখার ভর্তিচ্ছুরা কলা, বিজনেস স্টাডিজ, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদভূক্ত বিভাগগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে চাইলে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা মিলিয়ে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ ৮ থাকতে হবে। মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণরা এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা মিলিয়ে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ ৬.৫০ থাকলে শুধু কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভূক্ত বিভাগগুলোতে পরীক্ষা দিতে পারবে। তারা যদি আইন ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভূক্ত বিভাগগুলোতে পরীক্ষা দিতে চান সে ক্ষেত্রে তাদের মোট জিপিএ ৬.৫ এর জায়গায় জিপিএ ৭ থাকতে হবে। একইভাবে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উত্তীর্ণরা এবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা মিলিয়ে মোট জিপিএ ৭ পেলে শুধু বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভূক্ত বিভাগগুলোতে পরীক্ষা দিতে পারবে। ব্যবসায় শিক্ষা থেকে উত্তীর্ণরা যদি এবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের বিভাগগুলোতে পরীক্ষা দিতে চায় তাহলে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ জিপিএ ৭.৫ পেতে হবে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত না হলেও কয়েকটি বিভাগে আসন সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এবার ইংরেজি বিভাগের আসন সংখ্যা ৮০ থেকে বাড়িয়ে ১শ, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের আসন সংখ্যা ৮০ থেকে ১শ, ভাষা বিভাগের উর্দু বিষয়ে ৩০ থেকে ৩৫, ফার্সি বিষয়ে ৩০ থেকে ৩৫, সংস্কৃত বিষয়ে ৪৫ থেকে ৫০, পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলমপমেন্ট বিভাগে ৫০ থেকে ৬০, অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যাক্সটেনশন বিভাগে ২৫ থেকে ৩৫, ফিশারিজ বিভাগে ২৫ থেকে ৩০, অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যান্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগে ২০ থেকে ৩০, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে ১৫ থেকে ২০ এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের আসন সংখ্যা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হয়েছে। এছাড়া আদিবাসি ও উপজাতি কোটার আসন সংখ্যাও ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করা হয়েছে এবার।
ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি
বাংলা (সকাল ৯টা-১০টা), দর্শন (সকাল ১১টা-১২টা) ইংরেজী, (দুপুর ১টা-২টা) চারুকলা (বিকেল ৪টা-৫টা)
১৩-১০-২০০৯ মঙ্গলবার
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি(সকাল ৯টা-১০টা),ফার্সী(সকাল ১১টা-১২টা), আরবী (দুপুর ১টা-২টা), ইসলামিক স্টাডিজ (বিকেল ৪টা-৫টা)।
১৪-১০-২০০৯ বুধবার
ইতিহাস(সকাল ৯টা-১০টা), ফোকলোর(সকাল ১১টা-১২টা),উর্দু (দুপুর ১টা-২টা), ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট (বিকেল ৪টা-৫টা)।
১৫-১০-২০০৯ বৃহস্পতিবার
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা(সকাল ৯টা-১০টা), লোক প্রশাসন(সকাল ১১টা-১২টা), রাষ্ট্রবিজ্ঞান(দুপুর ১টা-২টা), নৃবিজ্ঞান(বিকেল ৪টা-৫টা)।
১৬-১০-২০০৯ শুক্রবার
সমাজ বিজ্ঞান(সকাল ৯টা-১০টা), অর্থনীতি(সকাল ১১টা-১২টা),
সমাজকর্ম (বিকেল ৪টা-৫টা)।
১৮-১০-২০০৯ রবিবার
নাট্যকলা ও সঙ্গীত- নাট্যকলা শাখা(সকাল ৯টা-১০টা), সংস্কৃত(সকাল ১১টা-১২টা), নাট্যকলা ও সঙ্গীত- সঙ্গীত শাখা(দুপুর ১টা-২টা), আইন ও বিচার(বিকেল ৪টা-৫টা)।
১৯-১০-২০০৯ সোমবার
হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা(সকাল ৯টা-১০টা), ব্যবস্থাপনা(সকাল ১১টা-১২টা), মার্কেটিং(দুপুর ১টা-২টা), ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং(বিকেল ৪টা-৫টা)।
২০-১০-২০০৯ মঙ্গলবার
ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা(সকাল ৯টা-১০টা), মনোবিজ্ঞান(সকাল ১১টা-১২টা), গণিত(দুপুর ১টা-২টা), ফলিত গণিত(বিকেল ৪টা-৫টা)।
২১-১০-২০০৯ বুধবার
পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট(সকাল ৯টা-১০টা), পরিসংখ্যান(সকাল ১১টা-১২টা), পদার্থ বিজ্ঞান(দুপুর ১টা-২টা), ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং(বিকেল ৪টা-৫টা)।
২২-১০-২০০৯ বৃহস্পতিবার
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং(সকাল ৯টা-১০টা), ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং(সকাল ১১টা-১২টা), রসায়ন(দুপুর ১টা-২টা), ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি(বিকেল ৪টা-৫টা)।
২৩-১০-২০০৯ শুক্রবার
প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান(সকাল ৯টা-১০টা), ফার্মেসী(সকাল ১১টা-১২টা), ম্যাটেরিয়াল্স সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি(বিকেল ৪টা-৫টা)।
২৪-১০-২০০৯ শনিবার
প্রাণিবিদ্যা(সকাল ৯টা-১০টা), এনিমেল হাজবেন্ড্রী এন্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স(সকাল ১১টা-১২টা), ফিশারীজ(দুপুর ১টা-২টা), ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা(বিকেল ৪টা-৫টা)।
২৫-১০-২০০৯ রোববার
ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি(সকাল ৯টা-১০টা), এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন(সকাল ১১টা-১২টা), জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি(দুপুর ১টা-২টা), উদ্ভিদবিজ্ঞান(বিকেল ৪টা-৫টা)।
বিঃ দ্রঃ
বিভাগ ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করবে। ভর্তি সংক্রানত্ম যাবতীয় তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ছাত্র-ছাত্রীকে নিজ দায়িত্বে জেনে নিতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার সময়কাল ১ (এক) ঘন্টা।
অনিবার্যকারণবশতঃ কোন তারিখের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হলে ঐ দিনের পরীক্ষাগুলো সকল পরীক্ষার শেষে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ঐ দিন ছুটি বা বন্ধ থাকলে পরীক্ষা তার পরের দিন অনুষ্ঠিত হবে।
আরইউনিউজ এক্সক্লুসিভ
রাবিতে ১০ বিভাগে বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া
আবার সেই দলীয় বিবেচনার চর্চা শুরু!
বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। কোন কোন বিভাগে বিজ্ঞাপিত পদের দ্বিগুণ, এমনকি তিন গুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এরইমধ্যে প্রকাশিত প্রায় ২৫টি বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ১০টি বিভাগের মনোনয়ন বোর্ডে এই চিত্র দেখা গেছে। সেই সঙ্গে দলীয় বিবেচনায় মেধাবীদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের বিবেচনায় নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। একটি বিভাগে বঞ্চিত প্রার্থী দলীয়করণের অভিযোগে আদালতে মামলা ঠুকেছেন। আদালত ওই বিভাগে নিয়োগের ওপর জারি করেছেন নিষেধাজ্ঞা।
সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। অনুসন্ধান চলাকালে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিভাগের সভাপতি, শিক্ষক ও নিয়োগপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এখানে বিএনপি-জামাতপন্থী অনেক শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন থেকে শুরু করে সবখানেই আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকরা সংখ্যাগত দিক থেকে দুর্বল অবস্থানে রয়েছেন। সে কারণেই অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তবে এক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে না বলে ওই কর্মকর্তা দাবি করেন।
গত ফেব্র“য়ারিতে বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (বিমক) একটি সূত্র জানায়, সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কমিশন থেকে প্রায় ৩শ শিক্ষকের নিয়োগের অনুমোদন নেয়ার মধ্য দিয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু করে। এর আগে বিমক থেকে বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত শিক্ষক না নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এপ্রিল-মে মাস নাগাদ বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ শুরু করে। ইতিমধ্যে ২৫টি বিভাগে ৮০ জন সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে এরই মধ্যে ১০টি বিভাগে মনোনয়ন বোর্ডে বাছাইকৃতদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকাগুলো পরবর্তী সিন্ডিকেটে এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে ওই বিভাগগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার কথা। প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মনোনয়ন বোর্ডে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বিভাগীয় সভাপতিদের মতের অমিলের ঘটনা ঘটেছে। বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক পদের সংখ্যা বিজ্ঞাপিত করলেও অনেক বিভাগের মনোনয়ন বোর্ডে পদের অধিক প্রার্থীকে মনোনয়নে চাপ দিয়েছে প্রশাসন। এই দ্বন্দ্বে কয়েকজন বিভাগীয় সভাপতির মনোনয়ন বোর্ড বয়কটের ঘটনাও ঘটেছে।
সূত্রটি আরো জানায়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ২টি পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ৫ সেপ্টেম্বর বাছাই চূড়ান্ত করতে মনোনয়ন বোর্ড বসে। সেখানে বোর্ডের সদস্যরা ৬ জনকে নিয়োগের প্রস্তাব করে। একই ঘটনা ঘটেছে অর্থনীতি বিভাগেও। ওই বিভাগে ৬টি পদ বিজ্ঞাপিত হলেও মনোনয়ন বোর্ড ৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। তবে বিভাগীয় সভাপতির আপত্তির কারণে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ফোকলোর বিভাগে ৪টি বিজ্ঞাপিত পদের বিপরীতে ৬ জনকে নিয়োগের জন্য বাছাই করতে চাইলে মনোনয়ন বোর্ডের সঙ্গে বিভাগীয় সভাপতির মতদ্বৈততা হয়। একপর্যায়ে তিনি বোর্ড বয়কটও করেন। এছাড়া ওই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইসলামের ইতিহাস থেকে পাশ করা একজনকে নিয়োগ নিয়েও আপত্তি রয়েছে বিভাগীয় সভাপতি শহীদুর রহমানের। বিভাগের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ফোকলোরে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে যেসব পড়াশোনা রয়েছে তার জন্য ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে একজন শিক্ষক এনে ক্লাশ করানো হতো। ওই বিষয়ে খুব বেশি কোর্স না থাকায় শিক্ষক নিয়োগের কোন প্রয়োজন এতদিন পড়েনি। কিন্তু ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে পাশ করা একজন শিক্ষকের কন্যাকে নিয়োগ দিতে ফোকলোর বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি রাখা হয়। পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রশাসন অস্থায়ী ভিত্তিতে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়। তাদের চাকরি স্থায়ী না করেই বর্তমান প্রশাসন বিভাগের ২টি শূন্য পদের বিপরীতে ৩ জনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। গত ৬ অক্টোবর ওই পদগুলোর বিপরীতে আবেদনের সময় শেষ হয়েছে।
বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগের প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বেশ ক’টি বিভাগে মেধাবীদের বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। চারুকলা বিভাগ সেগুলোর একটি। বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিএনপিপন্থী শিক্ষক জানান, বিভাগের প্রাচ্যকলায় ২জন ও ভাষ্কর্যে একজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে আবেদনকারী ইভা চ্যাটার্জির এসএসসি তৃতীয় বিভাগ থাকায়, বনি আদম ও শেখ মুনিরের বিষয় না মেলায় বিভাগ তাদের আবেদন নাকচ করে। কিন্তু প্রশাসন দলীয় প্রভাবে ওই তিনজনকে তালিকায় নিয়ে সাক্ষাতকার কার্ড দিয়েছে। এনিয়ে বিভাগীয় সভাপতির সঙ্গে প্রশাসনের দ্বন্দ্ব চলছে বলেও ওই শিক্ষক জানান। ভাষা বিভাগের উর্দু বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে রেজাউল করিম জামি নামের একজন আবেদনকারী ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন। তার অভিযোগ, দলীয় প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে চারটি প্রথম শ্রেণী থাকার পরও তাকে বিভাগ সাক্ষাতকার কার্ড দেয়নি। আদালত পরে ওই নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশও দিয়েছেন। ফোকলোর বিভাগেও এভাবে একজন আবেদনকারীকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ড. বিশ্বনাথ কুন্ডু নামের ওই আবেদনকারী অভিযোগ করেন, তার চারটি প্রথম শ্রেণী থাকার পরও তাকে দলীয় বিবেচনায় সাক্ষাতকার কার্ড দেয়া হয়নি। অথচ ৪ বছর আগে ফোকলোর বিষয়ে মাস্টার্স না থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাক্ষাতকার কার্ড দিয়েছিলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী জানান, বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ করা ঠিক নয়। তবে মাঝে মধ্যে বিভাগের বিশেষ অনুরোধে ও প্রয়োজন বিবেচনায় বিজ্ঞাপিত পদের বাইরেও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রয়োজন থাকলে তো পরবর্তীতে বিজ্ঞাপিত করেও শিক্ষক নেয়া যায়- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কোন কোন ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপিত করার সময় থাকে না।’
রাবিতে ভর্তি জালিয়াত চক্রের
হোতাসহ ৪ জন আটক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় হোতাসহ একটি জালিয়াত চক্রকে আটক করা হয়েছে। চক্রের চার সদস্য প্রবেশপত্রের ছবি পরিবর্তন করে অন্যের পরীক্ষা দিচ্ছিল। এদের মধ্যে তিন জন রাজশাহী, ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার ভর্তি পরীক্ষার চতুর্থ দিনে এদের আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা জুয়েল রানা নামের এক ভর্তি পরীক্ষার্থীকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। টাকার বিনিময়ে সে অন্যের প্রবেশপত্রে নিজের ছবি বসিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলো। একই পদ্ধতিতে সাংবাদিকতা বিভাগের পরীক্ষা দিচ্ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাহাবুব। এরা পরস্পর পূর্ব পরিচিত। জুয়েলের তথ্যের মাধ্যমে তাকেও আটক করে প্রক্টরিয়াল বডি। সবশেষে এদের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে এই চক্রের মূলহোতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান আতিকের নাম। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা বৃহস্পতিবার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার শেষ সময়ে তাকে আটক করে। এসময় আতিক ‘জুয়েল রানা’ নাম নিয়ে প্রবেশপত্রে নিজের ছবি বসিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছিলো। দুপুরে একই পদ্ধতি ব্যববহার করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছিল রুহুল আমিন নামের একজন ভর্তিচ্ছু। আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে তাকেও আটক করা হয়।
প্রক্টর প্রফেসর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করতে রাজি হননি। তিনি জানান, এই চক্রের শেকড় ওপড়াতে গোপনীয়তার স্বার্থে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চান না তিনি।
১৮ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষার আসন বিন্যাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষায় ১৬ অক্টোবর রোববার সকাল ৯টা থেকে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের নাট্যকলা, বেলা ১১টা থেকে ভাষা বিভাগের সংস্কৃত, দুপুর ১টা থেকে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের সঙ্গীত এবং বিকাল ৪টা থেকে আইন ও বিচার বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
নাট্যকলা বিষয়ের আসন বিন্যাস: রোল ০০১ থেকে ৭৪৯ সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজীভবন।
সংস্কৃত বিষয়ের আসন বিন্যাস: রোল ১০০১ থেকে ২৪২৯ শহীদুল¬াহ কলাভবন ও ২৪৩০ থেকে ২৮৬৫ সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজীভবন।
সঙ্গীত বিষয়ের আসন বিন্যাস: রোল ০১ থেকে ২৬৯ সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজীভবন।
আইন ও বিচার বিষয়ের আসন বিন্যাস: রোল ১০০০১ থেকে ১৩৯২৫ রবীন্দ্র কলাভবন, ১৩৯২৬ থেকে ১৪৬০৯ ও ২৬৭১২ থেকে ২৭০৫১ সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজীভবন, ১৪৬১০ থেকে ১৪৯২৫ রাবি নার্সারি স্কুল, ১৪৯২৬ থেকে ১৬৫৬৪ শহীদুল¬াহ কলাভবন, ১৬৫৬৫ থেকে ১৮১৬৮ মমতাজউদ্দীন কলাভবন, ১৮১৬৯ থেকে ২০৪৯৫ তৃতীয় বিজ্ঞানভবন, ২০৪৯৬ থেকে ২১০৮৭ চতুর্থ বিজ্ঞানভবন, ২১০৮৮ থেকে ২২০৩৪ প্রথম বিজ্ঞানভবন, ২২০৩৫ থেকে ২৩৯৪৪ দ্বিতীয় বিজ্ঞানভবন, ২৩৯৪৫ থেকে ২৫৬২৯ রাবি স্কুল, ২৫৬৩০ থেকে ২৬০১৯ কৃষি অনুষদভবন, ২৬০২০ থেকে ২৬৫৩৪ চারুকলা বিভাগভবন, ২৬৫৩৫ থেকে ২৬৭১১ ডিন্স কমপে¬ক্স, ২৭০৫২ থেকে ৩০৭৯৭ রাজশাহী কলেজ ও ৩০৭৯৮ থেকে ৩১০৫৭ রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল।
ক্যাম্পাসের বাইরেও এবার ভর্তি পরীক্ষা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষে সম্মান শ্রেণীতে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং এবং ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অ-বানিজ্য (বিজ্ঞান ও মানবিক) শাখার পরীক্ষা পূর্বঘোষিত তারিখ ও সময়ে রাজশাহী শহরে অবস্থিত রাজশাহী কলেজে অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত আসনবিন্যাসসহ অন্যান্য তথ্যাদি পরীক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে সংশি¬ষ্ট বিভাগ থেকে জেনে নিতে হবে।
রাবিতে ঈদ ও পূজার ছুটি শুরু, ক্যাম্পাস খুলবে ৩ অক্টোবর
তবে ১৬ তারিখ পর্যন্ত বিভাগসমূহ খোলা থাকবে এবং প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার ফরম জমা নেওয়ার কার্যক্রম চলবে। হল প্রভোস্ট কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। সিন্ডিকেটের অনুমোদন পেলে ১৭ তারিখ সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। রহমাতুন্নেসা হলের প্রোভোস্ট শুভ্রা রানী চন্দা বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনায় হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, আশা করছি সিন্ডিকেট তা অনুমোদন করবে।
এদিকে,বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত খোলা থাকলেও সেখানকার ইন্টারনেট সার্ভিস বুধবার থেকেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বাস চলাচলের সময়েও আংশিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। আজ থেকে সকাল ৮টা ১০, ৯টা ১০, বেলা ২টা ১০, দুপুর ৩টা ১৫, বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পাসের বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করবে। এদিকে গতকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ঈদের ছুটি কাটাতে বাড়ি যেতে শুরু করেছে।
-সাজ্জাদ হোসেন সাজু
শের-ই-বাংলা হলের ডাইনিং বন্ধ, শিক্ষার্থীরা বিপাকে
জানা গেছে, শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলে কম শিক্ষার্থী থাকার অজুহাতে হল কর্তৃপক্ষ ডাইনিং বন্ধ করে দেয়। ডাইনিং কর্মচারীদের দাবি মিলসংখ্যা কম হলে তাদের লাভের বদলে লোকসান হবে। তাই তারা ডাইনিং বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছেন,শুধু রমজান মাসের কারণে অন্য সময়ের চাইতে মিল চার্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। লোকসানের কোনো সম্ভবনাই থাকেনা। এদিকে হলে অবস্থানরত শতাধিক মুসলমান শিক্ষার্থী চরম দুর্ভোদের শিকার হয়েছেন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও খাবার না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী রোযা রাখতে পারেননি বলে জানা গেছে। কেউ কেউ বঙ্গবন্ধু হলের ডাইনিংয়ে গিয়ে সেহরী খেয়েছেন। কেউ বা বাধ্য হয়ে রান্না করেছেন।
হলের আবাসিক ছাত্র তারেক জানান,হলের ডাইনিং বন্ধ করে দিয়ে প্রোভোস্ট চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আরো জানান,হল কর্তৃপক্ষের উদ্যেগে হলে ইফতার মাহফিল করার কথা থাকলেও প্রোভোস্টের অনিচ্ছার কারণে তা এখনো হয়ে উঠেনি। অথচ ক্যাম্পাস ছুটি হওয়ায় অনেকে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ওই হল প্রোভোস্ট সুভাষ চন্দ্র শীল’র সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি ডাইনিং কর্মচারিদের সঙ্গে বসবেন। শীঘ্রই এর সমাধান করার আশ্বাস দেন।
-রুহুল আমীন হৃদয়
সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতংক রাবি শিক্ষার্থীরা
সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। সারা বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে এ আতঙ্ক বলে তারা জানিয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে সোয়াইন ফ্লু সনাক্তকরণ যন্ত্রপাতি বা এ ব্যাপারে কোন বিশেষজ্ঞ না থাকায় তারা আতঙ্কিত বলে জানান। এদিকে সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধ ও এ বিষয়ে জনমনে সচেতনতা বাড়াতে ‘অবদান’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ক্যাম্পাসে র্যালি বের করে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে থেকে বের হয়ে র্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লু আক্রান- হয়ে একজনের মৃত্যু ও আড়াই শতাধিক মানুষ সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসে আক্রান-- এমন খবরে আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে সবাই। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় ৩০ হাজার লোকের সম্পৃক্ততা এবং সীমান- এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফরম জমা দিতে আসায় এখানকার শিক্ষার্থীরা বেশি শঙ্কিত। আরো বেশি আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে মেয়েরা। সামান্য জ্বর-সর্দি হলেই সোয়াইন ফ্লু বলে বিরাট হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দিচ্ছে। তবে যাদের জ্বর-সর্দি, হাঁচি-কাশি, মাথা ব্যাথা বা গলা ব্যাথা করছে তাদের শরীরে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস রয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করার কোন ব্যবস'া না থাকায় এক আশঙ্কাটা গভীর হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রত্না কয়েকদিন আগে জ্বর-গলা ফোলা ও সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ায় সোয়াইন ফ্লু হয়েছে ভেবে প্রচুর কান্নাকাটি করে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার সিদ্ধান- নেয় তার পরিবার। তাপসী রবেয়া হলের আবাসিক ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা কেয়া জানান, তার কয়েকদিন থেকে মাথা ব্যাথা করছে ও নাক দিয়ে সর্দি ঝরছে, গায়ে কিছুটা জ্বরও রয়েছে। এ জন্য তিনি এ্যালাট্রোণ নামে একটি ওষুধ খেয়েছেন যা খেলে আগে তার অসুস'তা সেরে যেত। কিন' এবার তা সেরে না উঠায় তার আশঙ্কা তাকে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস আক্রমণ করে থাকতে পারে। ভাষা বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী ফারজানা মেহনাজ গত বুধবার হঠাৎ করেই অসুস' হয়ে যান। তাকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করা সম্ভব হলেও তার মন থেকে ফ্লু আশঙ্কা এখনো কাটেনি বলে তিনি জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র আমিনুল ইসলাম তার জ্বর-সর্দির বিষয়টিকে সোয়ইন ফ্লু হিসেবে সন্দেহ পোষণ করছেন। তাপসী রাবেয়া হলের রেশমা সুলতানা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে সোয়াইন ফ্লু সনাক্তকরণ বিভাগ খোলা দরকার। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে প্রচুর লোকের সমাগম হয় এবং তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন। সীমান্ত এলাকার লোক এ ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং ক্যাম্পাসে একটি ফ্লু সনাক্তকরণ বিভাগ খোলা উচিত।
এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক ডা. ওয়াজেদ হোসেন বেগ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ভাইরাস সনাক্তকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। এবং এখানে সরকারিভাবে কোন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়নি।
উর্দু বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে
নিষেধাজ্ঞা আদালতের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিভাগের উর্দু বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন রাজশাহী জজ আদালত। উর্দু বিষয়ের শিক্ষার্থী রেজাউল আলমের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
জানা গেছে, উর্দু বিষয়ে ১টি স্থায়ী প্রভাষক নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত ৭ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় জুলাইয়ের ৬ তারিখ পর্যন্ত। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে মোট ৯ জন দরখাস্ত দাখিল করেন। এর মধ্যে রেজাউল আলম নামের দরখাস্তকারীর মাস্টার্সের ফলাফল নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ফল প্রকাশের নির্দেশ দিলে সেই রায়ের কপি সংযুক্ত করে শিক্ষক পদে আবেদন করেন। পরবর্তীতে মাস্টার্সের সার্টিফিকেটও রেজিস্ট্রার বরাবর প্রদান করেন। নিয়ম অনুযায়ী আদালতের এই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাইভা কার্ড পাওয়ার কথা থাকলেও কোন কারণ ছাড়াই তাকে ভাইভা কার্ড দেয়া হয়নি বলে রেজাউল আলম দাবি করেন। এমতাবস্থায় রেজাউল আলম গত ২ সেপ্টেম্বর আবারো আদালতের শরণাপন্ন হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার ও ভাষা বিভাগের সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার এই নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. এমএ বারী বলেন, আমাদের নিকট আদালতের নিষেধাজ্ঞার কাগজপত্র আসলে আমরা আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।
উলে¬খ্য, দীর্ঘ চার বছর আটকে থাকার পর গত ৩০ জুলাই আদালতের নির্দেশে রেজাউল আলম নামের ওই শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। রেজাউল আলম প্রথম শ্রেণীতে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। ২০০৫ সালে এম এ (মাস্টার্স) উর্দূ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
রাবিতে জিয়ার প্রতিকৃতি পুনঃস্থাপনের দাবিতে
ভিসিকে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের স্মারকলিপি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতি পুনঃস্থাপনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদ। বৃহস্পতিবার তারা এই স্মারকলিপি দেন।
জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর আবদুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর চাঁদ মোহাম্মদ মোস্তফা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে শিক্ষকরা বলেন, বর্তমান প্রশাসন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হেয় করার মানসে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা থেকে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলেছে। স্মারকলিপিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা অবিলম্বে প্রতিকৃতিটি পুনঃস্থাপনের দাবি জানান। একইসঙ্গে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী টাওয়ার থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামফলক তুলে ফেলার নিন্দাও জানান স্মারকলিপিতে। সেটি যথাযথ মর্যাদায় পুনঃস্থাপনের দাবিও করেন তারা। অন্যথায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার কথা বলা হয় স্মারকলিপিতে
রাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পে হাতাহাতি
ফরম জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগেরর দুই গ্র“পে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসে উভয় গ্র“পের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্র“পগুলো পৃথক পৃথক মহড়া দেয়ায় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী আবদুস সালাম খান দীর্ঘক্ষণ মনোবিজ্ঞান বিভাগের বর্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম জমা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অগ্রণী ব্যাংকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় আরেক ছাত্রলীগ কর্মী সজীব লাইন ভেঙে ফরম জমা দিতে গেলে সালাম প্রতিবাদ করে। এসময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হলে উভয়ই তাদের পরিচিতদের ফোন করে ডাকে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন ও সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের গ্র“প ঘটনাস্থলে যায়। এসময় মুন গ্র“পের কর্মী এরশাদ ও রনিসহ কয়েকজন আয়েন গ্র“পের কর্মী সালাম ও মনিরকে কিল-ঘুসি মারে। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ঘটনার জের ধরে উভয় গ্র“প বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে পৃথক মহড়া দিয়েছে। এতে ক্যাম্পাস এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক ও উত্তেজনা।
আরইউনিউজ এক্সক্লুসিভ
‘বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এ যেন আর একটা
সারদা পুলিশ একাডেমি ’
টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছে। সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের বাইরের নীচতলার বারান্দার অংশটা পুলিশে গিজগিজ করছে। আর কাকভেজা শিক্ষার্থীরা এখানে ওখানে দাঁড়িয়ে বা ফ্লোরে বসেই বৃষ্টিতে আটকে থাকা সময়টুকু পার করছে কোনমতে। পুলিশের ভিড়ে একটু দম নিয়ে দাঁড়াবার সুযোগটু তাদের কপালে জোটেনি।
কোন হলের অতিথি কক্ষ আর অতিথি কক্ষ হিসেবে নেই। পুলিশকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। কোন শিক্ষার্থীর আত্মীয়-স্বজন বা অভিভাবক এলে তাকে হলে রাখা তো দূরের কথা একটুখানি বসতে দেবারও জায়গা নেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে এখন পুলিশই আবাসিক হিসেবে থাকে। মন্তব্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র হায়দার আলীর।
তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে এবারের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। প্রত্যেকবার ভর্তি পরীক্ষার সময় ভর্তিচ্ছুরা ফরম তোলা থেকে শুরু করে ফরম জমা ও ভর্তি হওয়া পর্যন্ত সময়টুকু তাদের কোন পরিচিত আবাসিক শিক্ষার্থীর কাছে থেকে এই কাজ করতো। কিন্তু এবার সেই সুযোগ নেই। হলেই ঢুকতেই পারছে না তো আর থাকার সুযোগ কোথায়? তাই ফরম জমা দিতে এসে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক একজন ছাত্র বলেন, ‘হলের খাবার ঘরে পুলিশ, পড়ার ঘরে পুলিশ, টিভি রুমে পুলিশ, খেলার রুমে পুলিশ, চলার পথে পুলিশ, বসার জায়গায় পুলিশ, লাইব্রেরির পত্রিকা রুমে পুলিশ। ঘরে বাইরে সবখানে পুলিশ। পুলিশের এতো উপস্থিতি দেখে মনে হয় এটি যেনো সারদা পুলিশ একাডেমির একটি শাখা।’
ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে সন্তুষ্ট নন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর ড. হাছানাত আলী বলেন, ‘পুলিশ দিয়েই যদি ক্যাম্পাস শান্ত রাখা যেতো তাহলে প্রক্টরিয়াল বডির প্রয়োজনীয়তা কী? বলপ্রয়োগ না করে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানই হয় দীর্ঘমেয়াদী শান্তির উপায়।’
ক্যাম্পাসে এসে স্বস্তিতে নেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও। পুলিশের উচ্চর্যায়ের কর্মকর্তারাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের এই গণহারের উপস্থিতিকে সমর্থন করেন না। তারা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পেটোয়া হয়ে তাদের উপস্থিতিকে বিব্রতকর বলে মনে করেন। গত বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশ না কারার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বরত পুলিশের একজন কর্মকতা জানান, ক্যাম্পাস প্রাণ চাঞ্চল্য, আনন্দের স্থান। এই পরিবেশে এভাবে বসে থাকতে আমাদেরও খারাপ লাগে। নীতিগতভাবে শিক্ষার পরিবেশে মারমূখী হয়ে থাকতে চাই না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যখন আমাদের এখানে বসিয়ে রাখেন তখন আর আমাদের বলার বা করার কিছুই থাকে না। প্লাটুনে প্লাটুনে পুলিশ রেখে শিক্ষার্থীদের মনে এক ধরণের ত্রাস সৃষ্টি হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ক্যাম্পাসকে পুলিশ দিয়ে ঘিরে রেখে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলগিকে সহায়তা করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে তারপরেও থেমে নেই অঘটন। পুলিশী প্রহরায় নিয়মিত অঘটন ঘটিয়ে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রায় ৩ মাস বন্ধ থাকার পর পুলিশী প্রহরায় ক্যাম্পাস খুললেও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলেই আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী। এর মধ্য সর্বশেষ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে গত ১৯ আগস্ট। অন্য ছাত্রসংগঠনগুলো বলছে, দুর্ণীতি আর দলীয়করণ করতেই ক্যাম্পাসে পুলিশ বসিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রমৈত্রীর আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কখনই কাম্য হতে পারে না। পুলিশ দিয়ে সব পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায় না।’ তিনি মনে করেন, পুলিশ উঠিয়ে দিয়েই আবার স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানো সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আল মাহবুব মিতুল বলেন, ‘অন্যান্য প্রশাসনের মতো এই প্রশাসনও ক্যাম্পাসে নিজেদের শোষণ ও দুর্নীতি কায়েমের জন্য পুলিশ প্রহরা বসিয়েছে। যা ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘিœত করছে।’ মিতুল বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে ঈদ পর্যন্ত সময় দিয়েছি। ঈদের পর পুলিশ না সরানো হলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব শান্ত করে পুলিশ উঠিয়ে নেয়া প্রয়োজন।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্রের সঙ্গে পুলিশ মানায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার পদ্ধতিগত পরিবর্তন ও প্রশাসনের চারিত্রিক পরিবর্তন না ঘটিয়ে পুলিশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা আরাফাত রেজা আশিক বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে পাহারা দেয়া যায়, শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা যায় না।’ অবিলম্বে পুলিশ না উঠানো হলে এই ইস্যু নিয়েই ছাত্রদল আন্দোলনে নামবে বলে আশিক জানান।
তবে ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন জানান, নিরাপত্তা বজায়েই পুলিশ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছাত্রলীগও পুলিশ উঠানোর দাবি জানাবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সোবহান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থেই ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুলিশ এমনিতেই আর থাকবে না। তবে তিনি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া বলতে কেমন স্বাভাবিক সে ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকেন।
ঘুড়ির মেলায় রঙিন রাবির আকাশ
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন ও চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুড়ি উতসব অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল মাঠে সকাল ১১টায় এই ঘুড়ি উতসব শুরু হয়ে দুপুর দেড়টার দিকে শেষ হয়।
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সভাপতি শাহাজান মৃধা বেনু জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেডারেশনের একটি শাখা খোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই উৎসবের আয়োজন। আগামীতে তারা বৃহত পরিসরে ঘুড়ি উতসব করবেন বলে আরইউনিউজকে জানান। উৎসবে মৌমাছি, ফেঙ্গি, ডেলটা, প্রজাপতি, ড্রাগন, ঈগল, গৌরিপোকা, মেঘবালিকা, মৌচাক, কামরাঙা, ছাতাচরকি ইত্যাদি নানান নামের ও রঙের ঘুড়ি উড়িয়ে অর্ধশতাধিক ঘুড়ি প্রেমী রঙিন করে তোলেন আকাশ।
-আমজাদ আজাদ
ওরা সাত জন
বিভাগের কোন পৃষ্ঠপোষকতা নেই, নেই কোন স্পন্সর। কিন্তু আছে উদ্যোম আর নিজের সৃষ্টির সঙ্গে চারপাশের পরিচয় ঘটানোর বিপুল আকুলতা। তাই নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে ওরা সাত জন নিজেদের সৃষ্টির সম্ভার নিয়ে আয়োজন করে ফেললেন একটি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর। এই সাতজন রাজশাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। আজ সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ‘শঙ্স্রব’ শীর্ষক তাদের যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।
আজ সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ নূরুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় তিনদিন ব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আবদুল মতিন তালুকদার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামাউন হাসান, আমিনুল ইসলাম, সুমা দেবী মন্ডল ও শানাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বিকাশ আনন্দ সেতু, ফারহানা ইয়াসমিন যুথী ও বিকাশ কানিত্ম কর্মকারের বিভিন্ন শিল্পকর্ম এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।
রাবি চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামাউন হাসান জানান, রাবি ও ঢাবির শিক্ষার্থীদের এমন যৌথ প্রদর্শনী এবারই প্রথম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাদের সৃষ্টিকর্ম সবার সামনে তুলে ধরতেই তারা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও ব্যায়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো তেল রং, জল রং, অ্যাক্রোলিক, পোড়ামাটি, গ্লেস ও পাথর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রদর্শনী আগামী বুধবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যনত্ম চলবে। শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্মের বিকাশ ঘটাতে এমন আরো প্রদর্শনীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে একটি আর্ট গ্যালারি নির্মাণের দাবিও জানান সামাউন।
ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় ছাত্র-শিক্ষকদের নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের
খুঁজে বের করে বিচারের দাবি সাজাপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষকের
আগস্টের ওই ছাত্র বিক্ষোভের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, "শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের কারণে স্বাভাবিকভাবেই ওই আন্দোলন হয়েছে। আর এ আন্দোলনকে দমানোর জন্য নির্যাতনের আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। তবে এই নির্যাতনের মাত্রা '৭১ এর মাত্রাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল।" রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি চাননি দাবি করে অধ্যাপক ভৌমিক বলেন, "শিক্ষকরা না চাইলেও দণ্ড মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের অপরাধ রয়ে গেছে। ঢাবির শিক্ষকরা যেভাবে রায় পেয়েছে, আমরাও আপিলে তা পাবো বলে আশা করছি।" দিনটি শুধুমাত্র পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রকৃতপক্ষে সেদিন কী ঘটেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে এতো মানুষ কোথা থেকে এলো, কারা উস্কে দিল তা খুঁজে বের করার দাবি জানান তিনি।
অপর সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক দুলাল বিশ্বাস বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার উপর যে কোন হস্তক্ষেপে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রত্যেক শিক্ষকের প্রতিরোধ নৈতিক দায়িত্ব। রাবির চারজন শিক্ষক সব লাঞ্ছনা ও ভয়কে অতিক্রম করে সময়ের বিবেক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করেন।"
২১ আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গিবাদ ও সামরিকবাদ বিরোধী দিবস হিসেবে পালনের দাবি জানিয়ে অধ্যাপক দুলাল বলেন, "২১ আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করলে তা ভবিষ্যত প্রজন্মকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর যেকোন ধরনের রাষ্ট্রীয় বা সামরিক হস্তক্ষেপে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে অনুপ্রেরণা যোগাবে।"
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের মধ্যে স্বাধীনতা কথাটি রয়ে গেছে। এখানে ছাত্রদের জন্য অনেক স্বাধীনতা দরকার। সরকারি কোন হস্তক্ষেপ না থাকলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও পড়ালেখার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে।"
উল্লেখ্য,২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের ঘটনার জের ধরে ২১ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌন মিছিল এবং ২২ আগস্ট বিক্ষোভের সময় এক রিক্সাচালক নিহতসহ শতাধিক আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার রেজিস্ট্রার বাদি হয়ে আলাদা তিনটি মামলা করে। ওই মামলাগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষার্থীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেছেন। আগামি ২৭ আগস্ট আপিলের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
হাবিবুর রহমান
নানা কর্মসূচীতে পালিত হলো ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন দিবস
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ নূরুল্লাহ্’র নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি প্রতিনিধিদল মানববন্ধনে যোগদান করে সংহতি প্রকাশ করে। মানববন্ধন চলাকালে শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক প্রফেসর মোজাফ্ফর হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও এর শিক্ষক-ছাত্ররা কখনই কোন ধরনের অগণতান্ত্রিক, অশুভ শক্তির হস্তক্ষেপ মেনে নেয়নি। আগস্ট বিক্ষোভ তার প্রমাণ। আগস্ট বিক্ষোভে নির্যাতিত শিক্ষক-ছাত্রদের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আদালতের রায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষক-ছাত্রদের দণ্ড রাষ্ট্রপতি মওকুফ করলেও নির্যাতিত শিক্ষক-ছাত্ররা অপরাধের কলঙ্ক এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন, সমস্যায় পড়েছেন চাকুরী ও বিদেশ গমনের ক্ষেত্রেÑ যা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর বিষয়। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষক-ছাত্রদের মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। এছাড়া বিনা কারণে শিক্ষকদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে অমানসিক নির্যাতনকারী অশুভ শক্তির মুখোশ উন্মোচন ও আগস্ট বিক্ষোভের নিরপেক্ষ তদন্ত ও নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি। মানববন্ধনে নির্যাতিত শিক্ষক প্রফেসর চৌধুরী সারোয়ার জাহান, প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, অধ্যাপক শামসুদ্দীন ইলিয়াস, অধ্যাপক এস.এম. আবু বকর, অধ্যাপক সরকার সুজিত কুমার, প্রফেসর মাহবুবর রহমান, প্রফেসর মোখলেসুর রহমান, প্রফেসর জালাল উদ্দীন, প্রফেসর চিত্তরঞ্জন মিশ্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সমাবেশের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট। সেখানে বক্তব্য রাখেন আগস্ট বিক্ষোভে কারাবন্দী শিক্ষক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক প্রফেসর মোজাফ্ফর হোসেন, কারা নির্যাতিত ছাত্রনেতা আবু সায়েম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে রবীন্দ্র ভবনের সামনে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট। এতে অনুশীলন নাট্যগোষ্ঠী নাটক পরিবেশন করে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গণযোগাযোগ চত্বরে আগস্ট বিক্ষোভ চলাকালীন বিভিন্ন আলোকচিত্রের প্রদর্শনীর আয়োজন করে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন। প্রদর্শনীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগস্ট বিক্ষোভের সূচনালগ্ন থেকে চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত মূহুর্তগুলোর আলোকচিত্র স্থান পায়। প্রদর্শনীতে জাবীদ অপু ও মামুন রশীদের এসব আলোকচিত্র দর্শকদের বিমোহিত ও আবেগাপ্লুত করে।
এদিকে, ২০০৭ সালের আগস্ট বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্ষোভে নির্যাতিত ছাত্র-শিক্ষকদের সম্মান জানাতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে রোববার দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধদিবস ছুটি পালিত হয়েছে। এসময়ে কোন ক্লাশ না হলেও পরীক্ষা ও অন্যান্য অ্যাকাডেমিক কাজ চলেছে।
শিবির-ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, পুলিশের নিষেধাজ্ঞা
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন খান জানান, দুটি সংগঠন একই স্থানে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শনিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিনোদপুর বাজার এলাকায় সকল প্রকার মিছিল-মিটিং-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এরপরও কোন সংগঠন কর্মসূচি পালন করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। সকাল থেকেই বিনোদপুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে রাবি শাখা শিবির সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আমাদের প্রচার র্যালি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়।
ছাত্রলীগ রাবি শাখার সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন মুন দাবি করেন, তারাই প্রথম কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু শিবির পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে পাল্টা কর্মসূচি দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তারা কর্মসূচি পালন করবেন না।
খুনীদের প্রতীকী ফাঁসি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীদের ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালযের রবীন্দ্র ভবনের সামনে বাবলাতলায় এই প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের প্রতীকী হিসেবে একজন ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী হিসেবে একজনের গলায় রশি ঝুলিয়ে প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক প্রফেসর মোজাফ্ফর হোসেন ও ব্যবস'াপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক এই প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রউপদেষ্টা প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, সহকারী প্রক্টর মুসতাক আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সনত্মান কমান্ডের আহ্বায়ক শেখ জিন্নাহ আল মামুন, মিজানুর রহমান মিঠু প্রমুখ। প্রতীকী ফাঁসি কমসূচির পর সেখানে গণসঙ্গীত পরিবেশন করে অরণী সাংস্কৃতিক সংসদ। পরে বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধপরাধীদের বিচার দাবিতে রবীন্দ্র ভবনের সামনে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড।
জিয়া-জোহা হলে ছাত্রশিবিরের উত্তেজনা
নিরাপত্তা চাইলো ছাত্রলীগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলে আবাসিকতার ফরম বিতরণে বাধা দিয়েছে ছাত্রশিবির। আজ সকালে এই বাধার পর দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবিরের মধ্যে। দুপুরে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে এক শিবির কর্মীর ব্যাগ তল্লাশীকে কেন্দ্র করে হল প্রশাসনের সঙ্গে শিবিরের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটলে আরেক দফা উত্তেজনা হয় দুই সংগঠনের মধ্যে। এদিকে, আজ দুপুরে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে হর এলাকায় নিজেদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
জিয়া হলের ছাত্ররা জানিয়েছেন, আজ সকালে হলে আবাসিকতার ফরম বিতরণ শুরু হয়। গত মঙ্গলবার এই আবাসিকতার তালিকা টানিয়েছিলো হল প্রশাসন। ওই তালিকা বাতিলের দাবি জানাতেই গত বৃহস্পতিবার হলে প্রক্টরসহ ছাত্রলীগকে অবরোধ করেছিলো শিবির। দেখা দিয়েছিলো উত্তেজনা। আজ ফরম বিতরণ শুরু করার পর হল শিবিরের সভাপতি মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন শিবির ক্যাডার তাতে বাধা দেয়। এতে ছাত্রলীগের সঙ্গে আবারো মুখোমুখি অবস'ানে যায় ছাত্রশিবির। পরিসি'তি উত্তপ্ত হতে শুরু করলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এসময় ছাত্রলীগ হল থেকে চলে গেলেও ওই হল ও অন্যান্য হল ইউনিট থেকে ক্যাডার জড়ো করে শিবির জিয়া হল এলাকাতেই অবস'ান নেয়। এই অবস'ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও পুলিশের উপ-কমিশনার সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা হলে যান। তারা প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে প্রায় ঘন্টাখানেক বৈঠক করে বেরিয়ে যান। এসময় সাংবাদিকরা বৈঠকের ব্যাপারে জানতে কথা বলতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর রেজাউল করিম হলের প্রহরীর মাধ্যমে জানান, তিনি ভেতরে তার মেহমানদের নিয়ে ব্যসত্ম আছে। এখন দেখা হবে না।
এদিকে, দুপুর ১২টার দিকে হলে ঢোকার সময় শিবির কর্মী সজীবের ব্যাগ তল্লাশী করতে চায় শহীদ শামসুজ্জোহা হল প্রশাসন। হল শিবিরের নেতা-কর্মীরা তাতে আপত্তি জানালে শুরু হয় বাকবিতন্ডা। সজীব অভিযোগ করে, ব্যাগ দেখাতে সম্মত না হলে হল প্রাধ্যক্ষ ড. মুর্ত্তজা খালেদ তার শার্টের কলার টেনে ধরেন। তবে প্রাধ্যক্ষ জানিয়েছেন, এর আগে হলে কয়েকবার অপকর্ম করে সজীব মুচলেকা দিয়েছিলো। একারণে তার ব্যাগ তল্লাশী করতে চাওয়া হয়েছিলো। কিন' সে তাতে রাজি তো হয়ইনি; উল্টো দায়িত্বরতদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে। এই ঘটনা নিয়ে ওই হলের চারপাশে কয়েক ঘন্টা অবস'ান করে শিবির ক্যাডাররা। সৃষ্টি হয় উত্তেজনাকর পরিসি'তি।
অন্যদিকে, গতকাল দুপুর ১টার দিকে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজেদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের নেতৃত্বে ৪০/৪৫ জন নেতা-কর্মী উপাচার্যের কাছে গিয়ে জানান, হল এলাকায় তারা নিরাপদে থাকতে পারছেন না। হলে তাদের মুষ্টিমেয় যে কয়জন নেতা-কর্মী থাকেন তারা প্রতিনিয়ত শিবিরের হুমকি ও চোখ রাঙানির মুখে রয়েছেন। এসময় আয়েন উদ্দিন বলেন,‘আগস্ট মাসকে কলঙ্কিত করতে শিবির উঠেপড়ে লেগেছে। তারা ক্যাম্পাস বন্ধ করার পায়তারা করতে প্রতিদিন আমাদের নেতা-কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসন যদি এব্যাপারে কোন ভূমিকা না রাখে তাহলে ছাত্রলীগ সর্বশক্তি দিয়ে শিবিরের মোকাবেলা করবে।’
মিশমা হত্যামামলার আসামীদের
গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী নিমা পারভীন মিশমা হত্যামামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে এবার থানা ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন তার সহপাঠীরা। আজ তার সহপাঠীদের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে আগামী ১৭ আগস্ট পুঠিয়া থানা ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেটে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন ব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান খান, মানবাধিকার কর্মী সাদীকুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ১০ জুন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জায়গীরপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে মৃত্যু হয় মিশমার। ১৪ জুন পুঠিয়া থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন মিশমার বাবা তসলিম উদ্দিন। অথচ এখনো পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বক্তারা আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করতে না পারলে পুঠিয়া থানা ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন। পাশাপাশি তারা মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার অপচেষ্টার অভিযোগে তদন্ত কর্মকর্তার অপসারণও দাবি করেন।
'ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সাংবাদিকতা
শিক্ষার আধুনিকায়ন প্রয়োজন'
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন জার্নালিজম এ্যালামনাই ফোরাম অব রাজশাহী ইউনিভার্সিটি-জাফরুর যৌথ আয়োজনে শনিবার ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতা শিক্ষা ও পেশা’ শীর্ষক এক দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সেমিনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ নূরুল্লাহ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা প্রফেসর এম সাদেকুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মশিহুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাফরুর সভাপিত সাজ্জাদ হোসেন শাহীন।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন- একাডেমিক ডিসিপ্লিন হিসাবে জার্নালিজম বা সাংবাদিকতা এদেশে খুব বেশী পুরাতন নয়। এই বিষয়টি সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা প্রচলিত আছে যে এ বিষয়ের শিক্ষা শুধু সাংবাদিকতা বা গণমাধ্যম কেন্দ্রিক। প্রকৃতপক্ষে, একাডেমিক ডিসিপ্লিন হিসাবে জার্নালিজম বহু বিষয় সমন্বয়ে মাল্টিডিসিপ্লিনারি। বর্তমানে বাংলাদেশে মিডিয়ার ব্যাপক বিকাশের পাশাপাশি কাজের বহুমুখী সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে এবং পেশাগত ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে মিডিয়া সম্পর্কিত শিক্ষা খুব প্রয়োজন। মিডিয়ার যত প্রসার ঘটছে সাংবাদিকতা শিক্ষার চাহিদা তত বাড়ছে। বহু বিষয় সমন্বয়ে একটি বিষয় হিসাবে জার্নালিজম বা সাংবাদিকতা একটি আকর্ষণীয় বিষয়। পেশা হিসাবে শুধু মিডিয়া সংশ্লিষ্ট নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও এর সম্ভাবনা ব্যাপক। সে জন্য প্রয়োজন কোর্স-কারিকুলাম সময়োপযোগী করা। ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতা শিক্ষা ও পেশা’ শীর্ষক সেমিনার থেকে সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর একাডেমিক সেশনে অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসের ‘রাইটিং দি মাইন্ড অব দি কারিকুলা: রি-ভিশানিং মাস কমিউনিকেশন এন্ড জার্নালিজম এডুকেশন ইন বাংলাদেশ’ ও মো. মাহমুদুল হক ছটিক-এর ‘জব মার্কেট ফর কমিউনিকেশন এন্ড জার্ণালিজম গ্রাজুয়েটস ইন বাংলাদেশ- প্রবলেমস এন্ড প্রসপেক্টস’ শীর্ষক দু’টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। প্রবন্ধ দুইটর ওপর আলোচনা করেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হাসান মিল্লাত ও বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মদ শিবলী।ওয়াচডগ বাংলাদেশ ও সেন্টার ফর কমিউনিকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেমিনার অনুষ্ঠানে সহযোগিতা প্রদান করে।সেমিনার শেষে সিনেট ভবনে মুক্ত আলোচনা আয়োজন করা হয়। এতে বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকতার পেশাগত চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
গাঁজা সেবনের পর...
গত শনিবার একসঙ্গে বসে গাঁজা সেবন করেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী সুশান্ত, পলাশ, হাবিব, রাসেল, আসাদ, তারেক, মিলটনসহ ৮/১০ জন। নেশাগ্রস্থ হবার এক পর্যায়ে সুশান্ত সন্তর্পণে নেয় পলাশের মোবাইল ফোনটি। পলাশ বিষয়টি টের পেলেও গাঁজার ধোঁয়ায় মগ্ন থাকায় কিছুই বলে নি তখন। পরদিন সকালে নেশা কাটলে ‘হুঁশ’ ফেরে তার। ফেরত চায় মোবাইল। ‘জাতে মাতাল, তালে ঠিক’ সুশান্ত তা আর ফেরত দিতে চায়নি। এই নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হয়ে গেলো মারপিট আর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
ছাত্রলীগ কর্মীরা জানালেন, গত শনিবার রাতে ওই মোবাইল ফোন সেট নেয়ার ঘটনায় গত সোমবার সন্ধ্যায় কাজলা এলাকায় পলাশ ও সুশান্তের সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মী হাবিব একটি বৈঠক করে। তাতে ফোন ফেরতের কথা দেয় সুশান্ত। কিন্তু এরপরও ফোনটি ফেরত না দেয়ায় হাবিব আজ মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে তাকে পেয়ে ফোনটি ফেরত দিতে বলে। এতে সুশান্ত উত্তেজিত হয়ে লোহার রড হাতে হাবিবকে মারতে উদ্যত হলে হাবিবের সঙ্গে থাকা পলাশ, ইয়ামিন ও রাঞ্জুসহ ৮/১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী সুশান্ত, রাসেল, আসাদ, তারেক ও মিলটনকে মারপিট করে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। পরে অবশ্য ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ ও হাবিবুর রহমানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আরইউনিউজকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন জানিয়েছেন, কর্মীদের ভুল বোঝবুঝির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
রাবির ছাত্রবিক্ষোভের ঘটনারও তদন্ত চান
প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ
২০০৭ সালের আগস্ট মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০০৭ সালের ২২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনা তদন্তের যে উদ্যোগ নিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমাজ এ দাবি জানায়।
বিক্ষোভের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাবি শাখা। অপরদিকে রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট এবং নাট্য সংগঠন 'অনুশীলন নাট্য দল' এ তদন্ত উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। রাবি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহবায়ক অধ্যাপক মো. মোজাফ্ফর হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিক্ষোভের সময় ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে টিএফআই সেলে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় তাদের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়। পরর্তী সময় সরকার এ দণ্ড মওকুফ করলেও এটি একটি কলংকজনক ঘটনা।
এদিকে ছাত্রলীগের এক বিবৃতিতে ছাত্র বিক্ষোভের ওই ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের ক্ষতিসাধন করা অভিযোগে প্রশাসন ছাত্রদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছে তা প্রত্যাহরের দাবি জানানো হয়। অপরদিকে রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট ও অনুশীলন নাট্যদল আগস্ট ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনা খতিয়ে দেখতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে স্বাগত জানিয়ে পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়েছে। এতে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে বিবৃতিতে আশা করা হয়।
আগস্টের ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় পুলিশ, ডিজিএফআই এবং রাবি রেজিস্ট্রার পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে। এ সময় রাবির আট শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। একটি মামলায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, সেলিম রেজা নিউটন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে চার বছরের সাজা দেয় আদালত। পরে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমার মাধ্যমে তারা মুক্তি পান।
ছাদ থেকে পড়ে এক ছাত্র আহত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্ত্র ভবনের চারতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র মাহমুদুল ইসলাম শাওন। আজ মঙ্গলার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
শাওনের সহপাঠীরা জানান, আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের উত্তর ব্লকের চার তলায় প্রথম বর্ষের ক্লাশ নেয়ার কথা ছিলো ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলামের। শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করছিলেন চার তলার বারান্দায়। এসময় চারতলার সিঁড়ি বেয়ে শাওনসহ কয়েকজন উঠে যান ছাদের ওপর। ক্লাশে শিক্ষক চলে এলে ছাদ থেকে কয়েকজন নেমে এলেও শাওন তার দুই সহপাঠী তারেক ও বনিসহ ছাদেই ছিলেন। তারেক জানান, শাওন ছাদের একেবারে কিনারায় ওঠে উল্টো দিকে মুখ করে বসেছিলেন। একটু পরে তারেক ও বনি টয়লেটে যান। মিনিট পাঁচেক পর তারা ফিরে এসে দেখতে পান শাওন ছাদে নেই। এসময় তারা ছাদের কিনারায় গিয়ে দেখতে পান শাওন নিচে মাটিতে পড়ে আছে। শাওনকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পড়ে যাবার পর মিনিট পনের তার জ্ঞান না থাকলেও পরে তার জ্ঞান ফিরে আসে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা ড. গোলাম মোস্তফা আরইউনিউজকে জানান, শাওনের শরীরে কোন রক্তপাত হয়নি। তাকে কিছু বেদনানাশক ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। তিনটি এক্সরে করার পড়ার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে গেছে।
তবে কী কারণে শাওন ছাদ থেকে পড়ে গেলো তা এখনো জানতে পারেন নি বিভাগের শিক্ষকরা। ড. গোলাম মোস্তফা জানান, স্বাভাবিক অবস'ায় ছাদ থেকে কারো পড়ে যাবার কথা নয়। তার সহপাঠীরা জানিয়েছে সে কোন কারণে হতাশায় ভুগছিলো। সেই হতাশা থেকে সে পড়ে যেতে পারে বলে তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন।
টেলিফোনে রাজশাহীর বাইরে থাকা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এএনএম জাহাঙ্গীর কবির জানান, শাওনের অবস্থা বেশ গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তারা দ্রুত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে ড. কবির জানান।
রাবির ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনাও তদন্ত দাবি
করলেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া,হাতাহাতি
ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ছাত্রাবাসে থাকা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে আজ শনিবার দিনভর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ক্যাম্পাস ছাড়াও ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় যুবলীগের সঙ্গে ছাত্রলীগের আরো এক দফা হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী সুহীন বোর্ডার না হয়েও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডী এলাকার রাহাত ম্যানশন নামের এক ছাত্রাবাসে শহীদুল নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মীর কক্ষে থাকতেন। সামনে পরীক্ষা থাকায় শহীদুল কয়েকদিন আগে সুহীনকে রুমে না থাকার অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুহীন গত শুক্রবার রাতে শহীদুলের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। শহীদুল বিষয়টি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আরিফুজ্জামান ইভেল রনিকে জানালে গতকাল শনিবার সকালে রনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে তালা ভেঙে শহীদুলকে কক্ষে উঠিয়ে দিয়ে আসেন। এ ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে সুহীন গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীদের নিয়ে রনি গ্রুপের ওপর হামলা চালাতে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের কাছে যান। এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ও পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিসি'তি নিয়ন্ত্রন করেন। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন ও সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন ঘটনাস'লে গিয়ে উভয় গ্রুপকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিলে পরিসি'তি কিছুটা শান্ত হয়।
এই ঘটনার পর দুপুর তিনটার দিকে আরিফুজ্জামান রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে স্থানীয় আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে স'ানীয় যুবলীগ কর্মী ইয়ামিন, ছাত্রলীগ কর্মী হাবিব ও রাতুল সেখানে গিয়ে রনি গ্রুপের নেতা-কর্মীদের দলীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীরাও এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে যোগ দেয়। প্রক্টর প্রফেসর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও সহকারী প্রক্টর মুসতাক আহমেদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে সেখানে গেলে ৩০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহীদের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা এসময় তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। পরে রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়লে পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত হয়।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন জানান, কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝবুঝি থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে। উভয় গ্রুপের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ছাত্রীকে পেটালো ছাত্রলীগ কর্মী
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে পেটালো বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী। অন্য এক ছেলের সঙ্গে প্রেম করার অভিযোগ তুলে গতকাল বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের পেছনে ওই ছাত্রীকে পিটিয়েছে কাওসার নামের ওই ছাত্রলীগ কর্মী। এসময় ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার বন্ধুকেও মারপিট করেছে সে।
ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কাওসার বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। ছাত্রীটি তাতে রাজি হয়নি। আজ বিকেল ৪টার দিকে কাওসার ওই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের পেছনে তার বন্ধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একই বর্ষের ছাত্র জামান মোরশেদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখে তাদের দুজনকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করেত থাকে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর ওপর চড়াও হয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারে। মোরশেদ ছাত্রীটিকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে কাওসার তাকেও মারপিট করে। পরে আশপাশের লোকজন তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করে মেডিকেল সেন্টারে পাঠায়।
তবে ছাত্রলীগ কর্মী কাওসার সাংবাদিকদের জানান, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। মাসখানেক আগে তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সামনে ওই ছাত্রী জানিয়েছিলো সে আর কারো সঙ্গে প্রেম করবে না। কিন' মোরশেদের সঙ্গে প্রেম করায় তাকে তিনি গালাগাল করেছেন। সেখানে মারপিটের ঘটনা ঘটেনি বলে কাওসার দাবি করেন।
এব্যাপারে গতকাল বিকেলে প্রক্টর অফিসে গিয়ে কাওসারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করছেন ওই ছাত্রী। সহকারী প্রক্টর মুসতাক আহমেদ জানান, ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস'া নেয়ার প্রক্রিয়া করছে প্রক্টরিয়াল বডি। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মহিলা পরিষদ। গতকাল বিকেলেই তারা বিষয়টি নিয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া সমকালকে বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষী ছাত্রলীগ কর্মীর শাসিত্মর দাবি জানাচ্ছি।’
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা জানান, কাওসারের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসহ বিভিন্ন হলের ডাইনিংয়ে খাবার খেয়ে টাকা না দেয়া, ছাত্রদল কর্মীদের মারপিট করা, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ছাত্রলীগ সভাপতির করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া
শিক্ষক সালাম জামিনে মুক্ত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়ের করা মামলায় কারাগের যাওয়া রাজশাহী বিশ্বিবদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক আবদুস সালাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ বুধবার সকালে তিনি জামিনে মুক্তি পান। গত রোববার গভীর রাতে ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুনের দায়ের করা চাদাবাজি ও হত্যার হুমকি মামলায় আবদুস সালামকে আটক করেছিলো পুলিশ।
এদিকে, আবদুস সালামকে আটকের পর গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। জনসংযোগ প্রশাসক প্রফেসর ড. ফায়েক উজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগের প্রভাষক আব্দুস সালামকে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় বহির্ভূত একটি ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আটকের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে নানামুখী সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, পলাশ হোসেন রাঙা নামক এক ব্যক্তি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রনেতাকে ২০ জুলাই মোবাইল ফোনে হুমকি দেয় এবং তার সাথে দেখা করতে বলে। উল্লেখিত ছাত্রনেতা এসময় পুলিশের শ্মরণাপন্ন হন। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস'লে পৌঁছে নিশ্চিত হয় যে পলাশ হোসেন রাঙার ফোন থেকেই হুমকি প্রদান করা হয়েছে। ফলে সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রাঙা পুলিশকে জানায়, চারুকলা বিভাগের প্রভাষক আব্দুল সালামের প্ররোচনাতেই উক্ত ছাত্রনেতাকে সে টেলিফোনে হুমকি প্রদান করেছে। এ পর্যায়ে প্রভাষক আব্দুস সালামকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ইতিমধ্যে উল্লেখিত ছাত্রনেতাও ধৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সামগ্রিক পরিসি'তির প্রেক্ষাপটে পুলিশ পলাশ হোসেন রাঙার পাশাপাশি প্রভাষক আব্দুস সালামকেও গ্রেফতার দেখায়।
একটি বাইরের ঘটনা হওয়া সত্ত্ব্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটিকে, বিশেষ করে শিক্ষক গ্রেফতারের বিষয়টিকে স্পর্শকাতর মনে করে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে, আবদুস সালামকে আটকের ঘটনাকে বিধি বহির্ভূত উল্লেখ করে ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। আজ দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমাজ বলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আইনের উর্ধে নন, কিন' অভিযোগের কোনরুপ তদন- না করে, গ্রেফতারি পরোয়ানা ব্যতীত এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে গ্রেফতার করা সম্পূর্ণ রীতি বহির্ভূত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকগণ এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
৫৭ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নেই ২০ বছর
প্রায় ২০ বছর ধরে অকার্যকর হয়ে রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-রাকসু। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি আদায় ও নানান কর্মকান্ড পরিচালনার এই সংসদ এভাবে অকার্যকর থাকায় অনেক অধিকার থেকেই বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। এভাবে নিষপ্রাণ থাকতে থাকতে এখন আর জোরালো দাবিও ওঠেনা এই সংসদ কার্যকর করার।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠার চার বছর পর ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পথচলা শুরু করে ছাত্রসংসদ। ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদের প্রথম যে নির্বাচন হয় তার নাম ছিলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ (Rajshahi University Students Union-RASU)। ১৯৬৩ সালে নতুন করে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয় ছাত্রসংসদের। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটিতে ছিলেন ছাত্রনেতা শেখ রুস্তম আলী, মাহবুবুল হক, সিরাজুল ইসলাম, বায়েজিদ আহমেদ, সরদার আমজাদ হোসেন, মুহা. জাকারিয়া প্রমুখ। ছাত্রসংসদের এবার নাম হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-রাকসু (Rajshahi University Centarl Students Union-RACSU)। ওই বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে রাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।বিস্তারিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নেই
এপর্যন্ত ১৪ বার অনুষ্ঠিত হয়েছে রাকসুর নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯-৯০ মেয়াদকালে। এরপর আর আলোর দেখা পায়নি রাকসু। রাসু থেকে রাকসু হওয়ার আগে ছাত্রসংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি চারবার। ১৯৬২-৬৩ মেয়াদে রাকসু চালু হবার পর ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত রাকসুর কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসনের জন্য এবং ১৯৮১ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন- একই কারণে রাকসু নির্বাচন বন্ধ ছিলো। সর্বশেষ ১৯৮৯ পর থেকে একেবারে স-ব্ধ হয়ে আছে এই গণতান্ত্রিক কাঠামো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবন এখন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মহড়াকক্ষ। শিক্ষক-ছাত্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-টিএসসিসি ভবনটির নির্মাণ কাজও গত ২০ বছর ধরে বন্ধ। তাই সাংস্কৃতিক কর্মীরা নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন এখানে। নাট্যকর্মী রফিক মুয়াজ্জিন বলেন, ‘রাকসুর কার্যক্রম চালু থাকলে এতো কম জায়গায় আমাদের নাট্যচর্চা করতে হতো না। রাকসু যে কোন আমাদের স্বপ্নের টিএসসিসি ভবন চালুর ব্যবস্থা করতো। আমাদেরও দখল করে রাখতে হতো না রাকসু ভবন।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে প্রতিবছর রাকসুর ফান্ডে টাকা দিতে হয় সেশন ফি’র সঙ্গে। রাকসুই তো নেই। এই টাকা কোথায় যায়, কী হয়; কিছু জানিনা। আমাদের কোন কাজে আসেনা।’ অচল রাকসু নিয়ে এমনভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল হাজব্রেন্ডি অ্যান্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহাবুর রহমান সোহাগ। এই টাকার হিসেব থাকে প্রশাসন কর্তৃক মনোনীত একজন কোষধ্যক্ষ’র কাছে। একজন শিক্ষককে এই দায়িত্ব দেয়া হয়। কয়েক মাস ধরে তাও নেই। টাকার হিসাব জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ নূরুল্লাহ্ জানান, নতুন কোষাধ্যক্ষ মনোনীত করার আগে সেই তথ্য দেয়া যাবে না।
রাকসু নির্বাচনের দাবিতে ছাত্রসংগঠনগুলোর একাট্টা না থাকাকেই এর মূল কারণ হিসেবে দেখা গেছে বছরের পর বছর ধরে। ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন, জাসদ ছাত্রলীগ সভাপতি তৈমুর ফারুক তুষার, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি রফি আহমেদ চঞ্চল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি অসীম চক্রবর্তী প্রত্যেকেই রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে কোন সংগঠনেরই সামপ্রতিককালে জোরালো ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় নি।
তাপসী রাবেয়া হলে আগুন,৬ ছাত্রী আহত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে হল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রীরা জানিয়েছেন। এসময় আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে গিয়ে ৬ জন ছাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
হলের গণরুম ‘কলরব’এর ছাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে হলের নিচ তলায় ‘কলরব’ নামের গণরুমের এক ছাত্রী তার বিছানার মশারীতে আগুন লেগেছে টের পাবার পর আতঙ্কিত হয়ে চিতকার শুরু করেন। এসময় অন্য ছাত্রীরা জেগে উঠলে সেখানে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে গিয়ে এসময় ৬ জন ছাত্রী আহত হন। এরা হলেন জেনি, তারিফা তাজ, নাফিসা খাতুন ও লিপিরঅ অন্য দুজনের নাম জানা যায়নি। অগ্নিকান্ডে মশারী ছাড়াও কয়েকটি মাল্টিপ্ল্যাগ পুড়ে যায় বলে ছাত্রীরা জানিয়েছেন।
হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব আরইউনিউজকে জানিয়েছেন, গণরুমে বিদ্যুত সংযোগের সকেট কম থাকায় টেবিল ফ্যান চালানো, মোবাইল ফোনে চার্জ দেয়া, চার্জার লাইটে চার্জ দেয়া এসব কাজে বিদ্যুত সংযোগ পেতে ছাত্রীরা মাল্টিপ্ল্যাগ ব্যবহার করতো। সেখান থেকে বিদ্যুতের শট সার্কিট হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রাতেই গণরুমের সব মাল্টিপ্ল্যাগ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। মাল্টিপ্ল্যাগ ছাড়া মূল লাইনের মাধ্যমে ছাত্রীরা যাতে বিদ্যুতের সংযোগ পায় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস'া নেয়া হচ্ছে বলে ড. মুর্শিদা জানান।
শের-ই-বাংলা হলে আবাসিকতার আবেদন আহবান
বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-বাংলা ফজলুল হক হলে আবাসিকতা দেয়া হবে ওই হলে সংযুক্ত দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও শেষ বর্ষের ছাত্রদের। গত ২১ জুন থেকে আবাসিকতা প্রাপইতর আবেদনপত্র বিক্রি চলছে। আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত ২০ টাকার বিনিময়ে এই ফরম সংগ্রহ করা যাবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে বর্তমান বর্ষের ভতির্র পে-ইন-স্লিপের ফটোকপি, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি এবং সব পরীক্ষার নম্বরপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে।
রাবি ছাত্রী মিশমা হত্যামামলা
পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক:মহিলা পরিষদ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী নিমা পারভীন মিশমা হত্যা মামলা নিয়ে পুলিশ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে। মামলা দায়েরের পর একমাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আজ মঙ্গলবার মহিলা পরিষদ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
মতবিনিময়র সভায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. নাদিরা বেগম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তানজীমা ইয়াসমিন, এফজব্লিউসিএ'র কর্মকর্তা সাদীকুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটি মেয়ের এমন নির্মম মৃত্যুতেও প্রশাসন এখনো কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। মিশমার মৃত্যুর পর পুঠিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার বাবা তসলিম উদ্দীন। পুঠিয়া থানা পুলিশ মামলা নিয়ে কিছুটা তদন্ত শুরু করলেও বর্তমানে তারা তেমন কোন ভূমিকা পালন করছে না। মামলা আসামীদের অবস্থান স্পষ্ট থাকার পরও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ পুলিশের এমন আচরণের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস-ক্ষেপ কামনা করে অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার করার দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুন বিকেলে শ্বশুর বাড়িতে যাবার পর কয়েক ঘন্টার মধ্যে রহস্যজনকভাবে মারা যান নিমা পারভীন মিশমা। মিশমার পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
রাবিতে ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে তুলকালাম
একটি বেসরকারি ফোন কোম্পানীর মডেম নিয়ে হলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আবদুল হাদি। নিজেই শুধু নন; তার সেখানে ইন্টারনেট সুবিধা নিতেন মাদার বখ্শ হলের আরো অনেক ছাত্র। কেউ টাকার বিনিময়ে আবার কেউ বিনামূল্যে ইন্টারনেটের ধারণা নিতেন হাদির কক্ষে গিয়ে। উদ্দেশ্য হলের সবার মাঝে ইন্টারনেট ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই ছাত্রদের এই অভ্যাসে বাঁধ সেধেছেন হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বেলায়েত হোসেন হাওলাদার, অভিযোগ ছাত্রদের। আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি হাদি ও হলের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছাত্রদের এই কাজ থেকে বিরত থাকার আদেশ জারি করেছেন।
হলের ছাত্ররাও কম যান না বটে। তারা প্রাধ্যক্ষের এই আদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে আজ দুপুরে উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সোবহানকে দিয়েছেন স্মারকলিপি। সেই সঙ্গে দাবি করেছেন হলে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা চালুর। হলের ছাত্র আবদুল হাদি, সুমন, মোস্তাফিজ, উজ্জ্বল, হাসান ও রশিদ বললেন, ‘সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছে অন্যদিকে হলে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। এতে তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়বে। আমরা শুধু এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারই নয় সেই সঙ্গে প্রত্যেকটি হলে ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা দেবার দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. বেলায়েত হোসেন হাওলাদার বললেন, ‘ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। ছাত্রদের শুধু বলা হয়েছে, তারা যেটিই তারা ব্যবহার করুক না কেন তা আমাদের জানিয়ে ও অনুমতি নিয়ে করতে হবে।’
অনাড়ম্বর আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব ধরণের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকায় অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার পালিত হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ তম প্রতিষ্ঠা দিবস। এ উপলক্ষে সকাল ৮টায় প্রশাসন ভবন-১ চত্বরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান জাতীয় পতাকা ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর মুহমমদ নূরূল্লাহ্ বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে দেন। এসময় কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এম আবদুর রহমান ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর এম এ বারী, ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, জনসংযোগ প্রশাসক প্রফেসর ফায়েক উজ্জামানসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীগণ উপসি'ত ছিলেন। এরপর তারা ঊনসত্তুরের গণঅভ্যূত্থানে শহীদ ড. জোহার মাজারে ও শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুনাজাত ও এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে উপাচার্য তার মন্তব্যে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় ও উত্তরাঞ্চলের প্রাচীনতম উচ্চ শিক্ষালয়, প্রায় ছয় দশক ধরে এদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে নিরবিচিছন্নভাবে কাজ করে যাচেছ। ফলে জাতীয় উন্নয়নে অপরিহার্য মানব সম্পদ তৈরীসহ এতদঞ্চলের মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। জাতির সকল আন্দোলন-সংগ্রামেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সচেতন ও সাহসী ভূমিকা পালন করে এসেছে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে অনেক সীমাবদ্ধতা সত্বেও এ বিশ্ববিদ্যালয় জাতির প্রতি তার দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট। প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছরে পদার্পনের ক্ষণে তিনি এই বিশ্ববিদ্যলায়কে এতদঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানকেন্দ্রে পরিণত করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সরকার, বিদ্যোৎসাহীসহ সকল সচেতন মহলের সহযোগিতা কামনা করেন। দেশ ও জাতির জন্য যা কিছু ভালো, সুন্দর ও কল্যাণকর তার সাথে থাকতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও বিকেলে সিনেট ভবনে প্রীতি সমিমলনী।
রাজনৈতিক সংবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক (আরইউনিউজ,০৩জুন):
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েনিরাপত্তার নামে ছাত্র অধিকার হরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন খর্ব করা হচ্ছেবলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। গতকাল বুধবার একবিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।বিশ্ববিদ্যালয়শাখা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি অসীম চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক রোকসানা পারভীন লিলিস্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়,গত ১ জুন বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর নিরাপত্তার নামেবিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ম-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত যে পরিপত্র প্রকাশকরেছে তার অধিকাংশেই ছাত্র অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামান্য কিছুশিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারির হীন স্বার্থ চরিতার্থ ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ করারউদ্দেশ্যে এসব বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়। বিবৃতিতেবিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে এসব বিধি-নিষেধ তুলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থরাজনৈতিক,গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক ধারা অব্যহত রাখার দাবিও জানানোহয়।
এক.
রাজশাহী ছিলো প্রাচীন বরেন্দ্রভূমির প্রাণকেন্দ্র। ইতিহাসের অনেক রাজশক্তির উত্থান পতনের স্বাক্ষী এই বরেন্দ্র ভূমি। এখন থেকে কয়েক হাজার বছর আগে পাল আমলে এই বরেন্দ্র অঞ্চলেরই নওগাঁ জেলার পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। জ্ঞান বিজ্ঞান ও ধর্মশাস্ত্র চর্চার প্রসিদ্ধ স্থান হিসেবে স্বীকৃত ছিলো এই বৌদ্ধবিহার। সে সময়ে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছিলো। বিশ্বের নানা দেশ থেকে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার জন্য এখানে আসত শিক্ষার্থীরা। কালের গহ্বরে আস্তে আস্তে নিজের গৌরব হারাতে থাকে বরেন্দ্রভূমি। পিছিয়ে পড়তে থাকে ক্রমশ। এক সময়ের সমৃদ্ধশালী বরেন্দ্র ভূমি পরিনত হয় শিক্ষাদীক্ষা অর্থনীতিসহ নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল হিসেবে।
ব্রিটিশ যুগে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষাদীক্ষা উন্নয়নের জন্য ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয রাজশাহী কলেজ। রাজশাহী কলেজের অবস্থানও ছিলো বেশ ওপরে। কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজের পরই রাজশাহী কলেজের স্থান ধরা হতো।সে সময়ে রাজশাহী কলেজে আইন বিভাগসহ পোস্ট গ্রাজুয়েট ক্লাশ চালু করা হয়েছিলো। কিন্ত এর কিছুদিন পরেই বন্ধ হয়ে যায় এসব কার্যক্রম। সে সময়েই রাজশাহীতে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান সরকার দেশের সব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে। রাজশাহীতে এ সময় স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়।
দুই.
ভাষা আন্দোলনের কিছুদিন আগ থেকেই রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন বেশ জোরে শোরেই শুরু হয়। ১৯৫০ সালের ১৫নভেম্বর রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের নিয়ে ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৫২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী রাজশাহী শহরের ভূবন মোহন পার্কে রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য সর্বপ্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দাবি অবশ্য ওঠে রাজশাহী কলেজেই। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী শহরের সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে সমবেত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ পাস করার দাবি তোলে। এই দাবি পাঠিয়ে দেয়া হয় সেসময়ের এমএলএ ও মন্ত্রীদের কাছে।
পরবর্তীতে ১৩ ফেব্রুয়ারী ভূবন মোহন পার্কেই অনুষ্ঠিত হয় আরও একটি জনসভা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ এমএলএ। সভায় বক্তব্য রাখেন ইদ্রিস আহমেদ এমএলএ, প্রভাষ চন্দ্র লাহিড়ী, খোরশেদ আলম, আনসার আলী, আব্দুল জব্বার প্রমূখ। ক্রমেই তীব্র হতে থাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা। পরে ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে ঢাকায় একটি ডেলিগেশন পাঠানো হয়। ওই ডেলিগেশনের সদস্যদের মধ্যে মরহুম আবুল কালাম চৌধুরী ও আব্দুর রহমানের নাম উল্লেখযোগ্য। এভাবে একের পর এক আন্দালনের চাপে স্থানীয় আইন পরিষদ রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়। এই আন্দোলনে একাত্ব হন পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী মাদার বখশ।
১৯৫৩ সালের ৬ ফেব্র“য়ারী ভূবন মোহন পার্কে আরও একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাদারবখশ সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, যদি রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না হয় তবে উত্তরবঙ্গকে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ দাবি করতে আমরা বাধ্য হব। মাদার বখশের এই বক্তব্যে সাড়া পড়ে দেশের সুধী মহলে। টনক নড়ে সরকারেরও। অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাশ হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন মাদারবখশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য প্রফেসর ইতরাত হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে। এ দুজনকে যুগ্ম সম্পাদক করে মোট ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার এম এ খুরশীদ।
তিন.
আনুষ্ঠানিকভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৫৪ সাল থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাম শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজে। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের দফতর প্রতিষ্ঠা করা হয় পদ্মার তীরের বড়কুঠি নামে পরিচিত ঐতিহাসিক রেশম কুঠির ওপর তলায়। বড়কুঠির কাছেই তৎকালীন ভোলানাথ বিশ্বেশ্বর হিন্দু একাডেমিতে চিকিৎসাকেন্দ্র ও পাঠাগার তেরি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতর স্থাপন করা হয় জমিদার কুঞ্জমোহন মৈত্রের বাড়িতে। বড়কুঠিপাড়ার মাতৃধাম এ স্থাপন করা হয় কলেজ পরিদর্শক দফতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতম রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন ওসমান গনি ও প্রথম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিযুক্ত হন অধ্যক্ষ আব্দুল করিম। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া করা বাড়িতে গড়ে ওঠে ছাত্রাবাস। রাজশাহী কলেজ সংলগ্ন ফুলার হোস্টেলকে রুপান্তরিত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবাস হিসেবে। বড়কুঠি এলাকার লালকুঠি ভবন ও আরেকটি ভাড়া করা ভবনে ছাত্রী নিবাস স্থাপন করা হয়।
১৯৬১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয় মতিহারের নিজস্ব ক্যাম্পাসে। এই ক্যাম্পাসটি গড়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ড. সোয়ানি টমাসের স্থাপত্য পরিকল্পনায়। দক্ষিণ দিক দিয়ে ছুটে চলেছে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক, উত্তরের রেললাইনের মাঝে ছায়া ঢাকা সবুজ শ্যামলে ঘেরা এই ক্যাম্পাস।
চার.
এখন প্রায় ৩০৪ হেক্টর জুড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষনা ইন্সটিটিউট, ৮টি অনুষদের অধীনে ৪৬টি বিভাগে বতৃমানে পরিচারিত হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। ক্যাম্পাসের উত্তর পুর্ব দিক জুড়ে রয়েছে ১১টি ছাত্রহল। ৫টি ছাত্রীহল ক্যাম্পাসের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। এর পাশেই নির্মিানাধীন রয়েছে আরও একটি ছাত্রী হল। পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত জুড়ে রয়েছে শিক্ষকদের জন্য আবাসিক এলাকা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লাইব্রেরীটি এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া রয়েছে, মেডিকেল সেন্টার, কম্পিউটার সেন্টার, শহীদ মিনার, স্টেডিয়াম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা এদেশের সর্বপ্রথম স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর। রয়েছে সাবাস বাংলাদেশ নামে একটি অপুর্ব শৈলির ভাষ্কর্য। আর রয়েছে গোল্ডেন যুবিলী টাওয়ার। প্রতিদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব স্থানে ঘুরতে আসেন সারা দেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য হিসেবে কর্মরত আছেন প্রফেসর এম এ সোবহান। উপ-উপাচার্য প্রফেসর নুরুল্লাহ।
পাঁচ.
দীর্ঘ ৫৬ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জড়িত হয়েছে বেশ কয়েকজন প্রতিথযশা ব্যাক্তিত্বের স্মৃতিতে। এখানে শিক্ষকতা করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী ও সাহিত্যক ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক,তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, খ্যাতনামা ঐতিহাসিক ডেভিড কফ, নৃবিজ্ঞানী পিটার বাউচি, ক্লারেন্স ম্যালেনি , জোহানা কর্ক প্যাট্রিক, বিশিষ্ট ঐতিহাসিক প্রফেসর আব্দুল করিম, রমিলা থামার, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথা সাহিত্যক হাসান আজিজুল হক প্রমূখ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ-২
গণঅব্যাহতি +গণবদলী= ভবিষ্যত অসহযোগিতা
আশিদিন বন্ধ থাকার পর খুলেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।খোলার পর বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে বর্তমান প্রশাসনকে। সেইসব নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক আয়োজনের দ্বিতীয় কিস্তি আজ প্রকাশিত হলো। প্রথম কিস্তি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএস
এমফিল-পিএইচডি'র ভর্তি পরীক্ষা ১১ জুন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ-আইবিএস’র ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামের স্থগিতকৃত ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার আইবিএস’র এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছ।
আইবিএস’র পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১১ জুন বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএস কার্যালয়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীদের ছবিযুক্ত প্রবেশপত্র ছাড়াও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি সঙ্গে আনতে হবে। ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান- আরো তথ্যের জন্য অফিস চলকালীন আইবিএস অফিসে যোগাযোগ করা যাবে। (ফোন: ০৭২১-৭৫০৯৮৫, ৭৫০৭৫৩, ৭৫০০৪১-৪৯ এক্সটেনশন ৪১৮৫।)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ-১
মাথাব্যাথার বড় কারণ সেই ৫৪৪ কর্মচারি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে বিএনপি-জামায়াত প্রশাসনের আমলে গণনিয়োগ পাওয়া ‘৫৪৪ সিরিজে’র কর্মচারিরা। ২০০৪ সালে নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মচারির প্রায় দুইশ জন এখনো স্থয়ী নিয়োগ পায়নি। নিয়োগের দাবিতে ধর্মঘট করে বিগত প্রশাসনের শেষাংশ একেবারে অকেজো করে দিয়েছিলো বহুল আলোচিত এই কর্মচারিরা। তাদের নিয়োগ আজো স্থায়ী হয়নি। দলীয় বিবেচনায় অস্থায়ী নিয়োগ পাওয়া এই কর্মচারিদের নিয়ে কোন মাথাব্যথাই নেই বর্তমান প্রশাসনের। এই অবস্থা বেশ জটিলতার সৃষ্টি করছে। এই কর্মচারিদের নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন। নিজেদের লোক হওয়ায় বিএনপি-জামায়াত প্রশাসন বিগত সময়ে বিবাদী হিসেবে সেই মামলা চালিয়েছে। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন সেই মামলা চালাতে এখনো কোন আগ্রহ দেখায়নি। সম্প্রতি মামলার একটি শুনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অংশ নেয়া হয়নি। পরপর তিন শুনানীতে অংশ না নিলে মামলার আগের রায়ই বহাল থাকবে। প্রসঙ্গত, মামলার আগের রায়ে উচ্চ আদালত এই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলো।
প্রশাসন মামলা না চালালে মামলাটির রায় এমন হলে বিশ্ববিদ্যালয় আবার অচল করে দিতে পারে সেই কর্মচারিরা। অন্যদিকে, প্রশাসন মামলা চালালে রায় যদি কর্মচারিদের পক্ষে যায় তাহলে নিজ দলের তোপের মুখে পড়বেন বর্তমান প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ওভারটাইম বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবিতে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়ে রেখেছে। দাবি পুরণ না হলে তারা পরিবহন বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন। ক্যাম্পাস খোলার পর এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলেও বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হয়ে পড়বে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করছে।
প্রথম পাতার পর শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশৃঙ্খলাকারী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সোবহান বলেন, দ্রুত ক্যাম্পাস খুলতে এবং শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী সংগঠন, এলাকাবাসী, পুলিশ প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, হল প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় সভাপতিদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। সবাই ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় শনিবার সকাল ৯টায় সকল আবাসিক হল এবং আগামী ১ জুন ক্যাম্পাস খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়- শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক মিছিল, সভা-সমাবেশ, মাইকিং, ব্যানার-পোস্টার টানানো, প্রচারপত্র বিলি নিষিদ্ধসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ থাকবে। ছাত্র হলগুলোতে কোন অনাবাসিক ছাত্র অবস্থান করতে পারবে না। তবে অনাবাসিক ছাত্রীরা হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে হলে অবস্থান করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর চৌধুরী মো. জাকারিয়া বলেন, "ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিষয়ে মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সার্বক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।"
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই দিনের ব্যবধানে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ, নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ, সিটি কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউটও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট ছাড়া বাকি প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে।
খুলেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
আবাসিক হলগুলো
ক্লাশ শুরু সোমবার
নিজস্ব প্রতিবেদক (আরইউনিউজ, ৩০মে): ৭৮ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার খুলে দেয়া হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো। সকাল ৯টার দিকে একযোগে শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো খুলে দেয়া হয়। পরিচয়পত্র ও ব্যাগ তল্লাশী করে শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করতে দেযা হয়েছে। ক্যাম্পাস জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪শ পুলিশ।
আগামী সোমবার ১ জুন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাশ শুরু হবে। সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সব ধরণের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সব ধরণের পোস্টার লাগানো, মাইকিংও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে ১ জুন
ক্যাম্পাস রাজনীতি নিষিদ্ধ : হল খুলবে ৩০ মে
নিজস্ব প্রতিবেদক (আরইউনিউজ) ১২ মে: গ্রীষ্মকালীন ছুটি ১৫ দিন কমিয়ে আগামী ১ জুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ৩০ মে খুলে দেয়া হবে আবাসিক হলগুলো।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের লাউঞ্জে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ক্যাম্পাস খোলার পর সব ধরণের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।
এ সম্পর্কিত আরও খবরের জন্য এখানে ক্লিক করুন
জুনের আগে রাবি না খোলার পরামর্শ দিলেন
বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরাও
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় সভাপতিদের পর এবার বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরাও (সাদা দল) জুনে ক্যাম্পাস খোলার পরামর্শ দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে উপাচর্য লাউঞ্জে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সোবহানের সঙ্গে বৈঠকে তারা পরামর্শ দেন।
গত ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির-ছাত্রলীগ সংঘর্ষে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান নোমানী নিহত হওয়ার জের ধরে রাবিসহ রাজশাহীর আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।
সোমবার দুপুরে রাবি উপাচার্য লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতপন্থী ২৫-৩০ জন শিক্ষক যোগ দেন। বৈঠকে শিক্ষকদের দেয়া সুপারিশ আগামী একাডেমিক কমিটির সভায় আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার একাডেমিক কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
শিক্ষকদের বিএনপি-জামায়াতপন্থী অংশ সাদা দলের নেতা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকুল ইসলাম এবং অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্জিকা অনুযায়ী ১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মের ছুটি। তারা এ ছুটি কমিয়ে আগামী ১ জুন ক্যাম্পাস খোলার ব্যাপারে সুপারিশ করেছেন। ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে তাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান এ দুই শিক্ষক। বৈঠকে উপস্থিত অপর শিক্ষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- অধ্যাপক এ কে এম আজাহারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, বেলাল হোসেন, শাসুল আলম সরকার, ড. এনামুল হক প্রমূখ। বিস্তারিত
জুনের আগে রাবি না খোলার পরামর্শ সভাপতিদের
জুনের আগে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় না খোলার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা। শনিবার উপাচার্যের সঙ্গে এক বৈঠকে সভাপতিরা এ মত দেন।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, গতকাল সকালে উপাচার্যের বাসভবনে সব বিভাগের সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে বসেন উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সোবহান। বৈঠকে অধিকাংশ শিক্ষক গ্রীষ্মকালীন ছুটি ১৫ দিন কমিয়ে পহেলা জুন থেকে বিশ^বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। প্রচণ্ড গরম, তীব্র লোডশেডিং ও চরম পানি সংকটের কারণে এখনই বিশ^বিদ্যালয় না খোলার পরামর্শ দেন সভাপতিরা। সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বেশিরভাগ সভাপতি গ্রীষ্মকালীন ছুটি কিছুটা কমিয়ে পহেলা জুন বা জুনের প্রথম সপ্তাহে খোলার পক্ষে মত দিয়েছেন।’ বিস্তারিত
মে মাসেই খুলবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : উপাচার্য
নিজস্ব প্রতিবেদক, আরইউনিউজ, ২০এপ্রিল, ২০০৯
আগামী মে মাসের যেকোন সময় খুলে দেয়া হবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ১ মে থেকে শুরু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীস্মকালীন ছুটি কিছুটা কমিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। রোববার রাজশাহী সার্কিট হাউজে নগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে স'ানীয় প্রশাসনের এক মতবিনিময় সভা থেকে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সোবহান সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
উপাচার্য জানান, সভায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া নগরীর অনির্দিষ্টকাল বন্ধ হওয়া অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশের পরিসি'তি এখন ভালো। এজন্য ২৬ ও ২৭ এপ্রিল রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ খোলার সিদ্ধান- হয়েছে সভায়। কিন' রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের পরিসি'তি এখনো উত্তেজনাকর। কয়েকটি সংগঠন পাল্টাপাল্টি মিছিল-সমাবেশ করছে। তাই এখনি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান- নেয়া যাচ্ছে না। এদিকে, আগামী ১ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড়মাসের গ্রীস্মকালীন ছুটি শুরু হবে। প্রশাসন সেশনজট কমাতে এবার দীর্ঘ এই গ্রীস্মাবকাশ কমানোর চিন-া করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা করে এই ছুটি কমানোর সিদ্ধান- আগে নিতে হবে। এরপর সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ ঘোষণা করা হবে। স্পষ্ট করে দিনক্ষণ না জানালেও মে মাসের যেকোন সময় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হতে পারে বলে উপাচার্য সাংবাদিকদের জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির সংঘর্ষে একজন নিহত হবার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর আটটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ করে দেয়া হয়।
সংবাদ সংক্ষেপ
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি শুরু
আরইউনিউজ, ২০ এপ্রিল:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সার্বক্ষণিক পরিচয়পত্র বহন, গোপন ক্যামেরা স্থাপন, প্রবেশগেটে নাম-পরিচয় লিপিবদ্ধ করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।