ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০,
বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার ৪

পূর্ব বিরোধের জের ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের মধ্যে বুধবার সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চাপাতির আঘাতে আহত আশীসের অবস্থা গুরুতর। ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা চলছে। এ ঘটনায় পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের মিঠু-ডালিম গ্রুপের নাহিদ, ফিরোজ, ইয়াহিয়াসহ ২০/২৫ জন কর্মী লোহার রড ও চাপাতি হাতে শরীফ গ্রুপের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। রবীন্দ্র ভবনের সামনে শরীফ গ্রুপের জিয়া, পলাশ, আরিফ, সুমনসহ ১৫/২০ জন হামলাকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত মিঠু-ডালিম গ্রুপের কর্মী আশীসকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শরীফ গ্রুপের আরিফ, পলাশ, সুমন, নয়ন ও মিঠু-ডালিম গ্রুপের নাহিদ, ফিরোজসহ আরও আটজন আহত হন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন মিঠু-ডালিম গ্রুপের কর্মী ইয়াহিয়া। সংঘর্ষের কারণে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, শরীফ গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা এলাকায় ও মিঠু-ডালিম গ্রুপ বিনোদপুর এলাকায় আবারও সংগঠিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা চলছে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ ছাত্রলীগের নেতারাও। সংগঠনের আইন বিষয়ক সম্পাদক আরিফুজ্জামান রনি ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আউয়াল কবির জয় সাংবাদিকদের বলেন, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি মহলের ইন্ধনে কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দুই নেতা।
এদিকে বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ছাত্রলীগের চার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত কর্মী কমল আশিস মল্লিকের দায়ের করা মামলায় গত বুধবার গভীর রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মতিহার থানা পুলিশ জানায়, বুধবার গভীর রাতে আশিস বাদী হয়ে মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গভীর রাতেই কাজলা এলাকা থেকে মামলার আসামী শরীফ গ্র“পের শরীফুল ইসলাম শরীফ, শাহীন, রকি ও নাহিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার অন্য আসামীরা হলো শরীফ গ্র“পের আরিফ, নয়ন, সাইমুম পারভেজ নিনাত, রুবেল, দেলোয়ার হোসেন ডিলস, পারভেজ, জিয়া ও অপু।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন খান জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামীদের আটকের জন্য অভিযান চলছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে, চার কর্মীকে গ্রেফতারের পর ছাত্রলীগের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গ্র“পগুলোর মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোন সময় আবারো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় ক্যাম্পাস জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অছাত্রদের দিয়ে চলছে রাবি ছাত্রলীগ
জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০০৪ সালের ২৩ জুন। সেই সময়ের রাবি শিক্ষার্থী ইব্রাহীম হোসেন মুন সভাপতি ও আয়েন উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে স্থান পাওয়াদের মধ্যে বর্তমানে ১০/১২ জন ক্যাম্পাসে অবস্থান করলেও অধিকাংশেরই ছাত্রত্ব নেই। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, এবং যুগ্ন সম্পাদকসহ গুরত্বপূর্ণ পদের অধিকারীদের ছাত্রত্ব বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে। সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন ও সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের ছাত্রত্বও শেষ হয়েছে প্রায় ৫ বছর আগে। এ অবস্থায় নতুন কমিটির দাবিতে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে প্লাটফরম হিসেবে ব্যবহার করে আন্দোলন ও গোপন এজেন্ডা চালিয়ে যাচ্ছে পরবর্তীতে দলে আসা সাধারণ কর্মীরা। পরবর্তীতে যারা ছাত্রলীগে যোগ দিয়ে ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যেমে ছাত্রলীগকে সক্রিয় করে তোলার চেষ্টা করেছে তাদের অনেকের ছাত্র জীবন শেষ হয়ে এলেও নতুন কমিটি না হওয়ায় একঅর্থে দলে তাদের কোন স্থান হচ্ছেনা।
আবার মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগে প্রচুর নতুন মুখের আবির্ভাব হয়েছে। পুরাতন নেতারাও নাকি তাদের চিহ্নিত করতে পারেননা। এ সুযোগে ছাত্রশিবিরের সদস্যরা ছাত্রলীগে জায়গা করে নিয়ে দলে বিশৃঙ্খলা সুষ্টি করছে বলে অনেক ছাত্রলীগনেতা মনে করেন। এরকমই একজন ভাষা বিভাগ (ফার্সী) থেকে এম.এ পাশ করা আজমল হক তুহিন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজমল হক তুহিন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সক্রিয় ছাত্রশিবির করত। সেই সময় জামাত সমর্থিত শিক্ষকদের সহায়তায় সে অনার্স-মাস্টার্স উভয়ে প্রথম শ্রেনী লাভ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে তুহিন ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করন শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা কনরছ বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগেরই একাধিক নেতাকর্মী।
ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন এবং সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষকে ব্যক্তিগত ঘটনা দাবি করে বলেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে ব্যক্তিরোষের কোন সম্পর্ক নেই। কমিটির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, কেন্দ্র থেকে অনুমতি পেলেই আমারা কমিটি গঠনের প্রস্তুতি গ্রহণ করবো।
আগস্ট বিক্ষোভের মামলা প্রত্যাহারের দাবি রাবি ছাত্রফ্রন্টের
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাজলা গেট এলাকা থেকে মিছিল বের করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। মিছিলটি মেইন গেট হয়ে আবার কাজলা গেটে এসেই শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মাহবুব মিতুল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, আগস্ট বিক্ষোভ সমগ্র জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। অবিলম্বে ওই বিক্ষোভের ঘটনা দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহার করে সেই কলঙ্ক দূর করতে হবে। আগামীতে যেনো এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা না ঘটে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান বক্তারা।
১৫ আগস্ট নিয়ে কটুক্তি করায় রাবিতে
সাকা চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা)-র কুশ পুত্তলিকা পুড়িয়েছে রাবি ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা । ‘আর নয় ৭৫ এবার হবে একাত্তর’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা)-র কুশ পুস্তলিকা পুড়িয়েছে রাবি ছাত্রলীগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করায় দায়ে সাকা চৌধুরীর কুশ পুস্তলিকা পোড়ানোর মাধ্যমে তার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে রাবি ছাত্রলীগের বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মীর উপস্থিতিতে এই কুশ পুস্তলিকা দাহ কার্যক্রম চালায় ।
জানা গেছে ,বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকীকে জাতীয় শোক দিবস পালন করায় এই কটুক্তিমূলক কথা বলেন সাকা চৌধুরী। এতে সারা দেশের ন্যায় রাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যেও চরম ক্ষোপের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাবি ছাত্রলীগ সাকা চৌধুরীর কুশ পুস্তলিকা দাহ করে। রেজাউল হক শুভ্রের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাবি শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আহমেদ আলী, আল হেলাল প্রিন্স প্রমূখ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রলীগ নেতা হাবীব, সবুজসারওয়ার রউফ,বিপু, টাকিব প্রমূখ। বক্তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম ষড়যন্ত্রকরী ও একাত্তরের রাজাকার সাকা চৌধুরী পাগল হয়ে গেছে। তাই সে বাংলাদেশের রুপকার জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়েএই রকম কটুক্তি করছে। আবারে ভবিষ্যতে এধরনের কোন মন্তব্য করলে রাবি ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা তা কেন দিন মেনে নেবে না’। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এরুপ মন্তব্য করায় তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। পাশাপাশি তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে।
মহাজোট আমলে রাবিতে ছাত্রদলের প্রথম দলীয় কার্যক্রম
বিক্ষোভ মিছিলটি কাজলা গেইটে শুরু হয়ে বিনোদপুর বাজার পর্যন্ত যেয়ে আবার ফিরে আসে এবং তালাইমারি মোড় হয়ে কাজলা গেইটে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করে। বিক্ষোভ মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের নেতা সালাউদ্দিন রানা, মামুন, কামরুল , রতœা, রোজ, আশিকুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, এ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম, বিএনপির জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ও এর চার্জসিট প্রত্যাহার করতে হবে। তারা এসময় অভিযোগ করে বলেন, সরকার আওয়ামী নেতাদের মামলা প্রত্যাহার করে নিলেও বিএনপি নেতাদের বেলায় চুপ থাকছে। যা অতি ন্যাক্কারজনক হিসেবে সাধারণ জনগণের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। বক্তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
উত্তেজনা এড়াতে এ সময় ক্যাম্পাসের কাজলা গেইটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
তুচ্ছ ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে উত্তেজনা
তুচ্ছ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে জুনিয়র এক কর্মী সিনিয়র এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ‘তুই’ সম্বোধন করায় ঘটনার সূত্রপাত হয়।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে বসে ছাত্রলীগ কর্মী মিজানুর রহমান মিঠুকে রুহুল আমিন নামের জুনিয়র এক ছাত্রলীগ কর্মী ‘তুই’ সম্বোধন করেন। মিঠু ঘটনার প্রতিবাদ জানালে তাদের দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে শাহীন নামের আরেক ছাত্রলীগ কর্মী রুহুলের পক্ষ নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করলে দলীয় নেতা-কর্মীরা সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন ও সম্পাদক আয়েন উদ্দিন গ্রুপ পৃথক হয়ে মুখোমুখি অবস্থা নেয়। এসময় আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রক্টর প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও সহকারী প্রক্টর মুসতাক আহমেদ ছাত্রলীগ কর্মী মিঠু ও রুহুলকে সেখান থেকে তার অফিসে নিয়ে যান। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন ও সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে এখনো চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাবিতে পুলিশের দখলে প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর দলীয় টেন্ট
নিরাপত্তার নামে পুলিশ মোতায়েনে অনেকটা ব্যারাকে পরিণত হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। আবাসিক হলগুলোর গেস্টরুম ছাড়াও প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর দলীয় টেন্টগুলো এখন পুরোপুরিই পুলিশের দখলে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, ১৩ মার্চের শিবির ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর প্রশাসনিকভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে ওই সংগঠন দুটি। গতকালও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের তাদের দলীয় টেন্টে দেখা গেছে। শুধু সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপের মধ্যে রাখা হয়েছে বাম ঘরাণার ছোট সংগঠনগুলোকে। এরই মধ্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও ছাত্রমৈত্রীর টেন্টে পুলিশের অতিমাত্রার উপস্থিতির কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের বসার উপায় নেই।
এ ব্যাপারে ‘মানুষ অধ্যায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন এই চলমান অবস্থাকে কতৃপক্ষের ধারাবাহিক নাটক ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ফারহানা পারভীন লিলি বলেন, ক্যাম্পাস খোলার পর ক্যাম্পাসে পুলিশের অবস্থান, হলে চোর প্রবেশ , নাইট শিফট চালুর বিরোধিতাসহ নানা ধরনের প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। মূলত এসব কারণে আমাদের কোনঠাসা করে রাখতে কতৃপক্ষ টেন্টে পুলিশ বসিয়ে রেখেছে।
ছাত্রমৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি মাযহারুল রিপন বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি এ রকম করে তাহলে আমাদের কোন উপায় নাই। তবে আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি খুব তাড়াতাড়ি পুলিশ সরানোর আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
দলীয় টেন্টে পুলিশ বসানোর ব্যাপারে ছাত্রলীগ জাসদের রাবি শাখার সভাপতি তৈমুর ফারুক তুষার বলেন, প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নিয়ে কতৃপক্ষ স্বৈরাচারী আচরণ করছে। এ থেকে মুক্তি পেতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। তবে ছাত্রলীগ এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়য়েছে ছাত্রইউনিয়ন। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানানো হয়।।
মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি রফি আহমেদ চঞ্চল ও সাধারণ সম্পাদক শিপন আহমেদ। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত, আইন ও বিচার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগে সমপ্রতি সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্টিফিকেট বিক্রির কারখানায় রুপান্তরের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করে শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। নইলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
নাট্যকলা বিভাগে 'শেষের কবিতা'
রুহুল আমীন হৃদয়, ১৫ জুলাই
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উপন্যাস ‘শেষের কবিতা’ পাঠ অভিনয়ের মাধ্যেমে উপস্থাপন করা হলো আজ বুধবার। নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের থিয়েটার ল্যাবে বিকেল ৩টায় এটি পরিবেশন করা হয়। এই পাঠ অভিনয়ের পাঠ্যরূপ ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রহমান রাজু। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিভাগের বিএ (সম্মান) পার্ট-১, ২০০৮-এর শিক্ষার্থী সারি, রুকি, বাঁধন, সজল, নাজমুল, পলাশ, মারুফ, সারোয়ার, রনি, তুষার, মামুন প্রমুখ।
তিন আবাসিক শিক্ষককে অব্যহতি
রাবির ৮১ শিবির নেতা-কর্মীর জামিন আবেদন
শুনানিতে হাইকোর্টের ২টি বেঞ্চের অপারগতা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ইসলামী ছাত্র শিবিরের ৮১ জন নেতা-কর্মীর জামিনের আবেদন শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চ। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ ৮১ জনের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার রাজ্জাক প্রথমে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মো. শামসুল হুদার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে জামিনের শুনানির জন্য আবেদন করেন। এই বেঞ্চ শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মো. ইমান আলী ও মো. ফজলুল রহমান সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে যান ব্যারিস্টার রাজ্জাক। তবে এই বেঞ্চও শুনানি করতে অপারগতা জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য মিছিল বের করার চেষ্টা করে শিবিরের কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে শিবিরের কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে ১০ পুলিশ আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মতিহার থানায় পৃথক দুটি মামলা করে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০১ পরবর্তী
দুর্নীতির তদন্ত চলছে: উপাচার্য
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের মনোনীত দলীয় উপাচার্যসহ প্রশাসনের অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে।
প্রধান শিরোনামক্যাম্পাস খোলার পর বাড়বে ছাত্রলীগের কোন্দল
![]() আরইউনিউজ, ২০ এপ্রিল, ২০০৯: |
রাজনীতির আরও খবররাবিতে দলগোছাতে শুরু করেছেন রাবির বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা আরইউনিউজ, ১৯ এপ্রিল, ২০০৯ |